কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় গোমতী নদীর চরাঞ্চলে আলু চাষ হয় প্রচুর পরিমাণে। কৃষকেরা আলুর বেশ ভালো দাম পেয়েছিলেন গত মৌসুমে। তাই এবার তাঁরা উপজেলার ১৪০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। তবে আবাদের শুরুতেই বৃষ্টি হয়। এতে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষকরা আশা করছেন ১০৫ হেক্টর জমি থেকে ২ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন আলুর উৎপাদন হবে। গত বছর এই উপজেলায় আলুর চাষ হয়েছিল ১২৮ হেক্টর জমিতে। তবে গোমতী নদীর চরাঞ্চলে আলু চাষ হলেও কৃষকদের শঙ্কা কাটেনি।
মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা
আলুর ফলন যদিও অনেকটা ভালো, কিন্তু কৃষকদের মনে ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কা জেগেছে।
তারা আশঙ্কা করছেন দাম কমে গেলে মধ্যস্বত্বভোগীদের খপ্পরে পড়ে যাবেন তারা।
আর এতে খরচের টাকাটাও তারা তুলতে পারবেন না বলে মনে করছেন।
উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আলুচাষি সুলতান মিয়া।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, চার বিঘা জমিতে তিনি ডায়মন্ড জাতের আলুর চাষ করেছেন।
আর এতে বিঘাপ্রতি ৬০-৭০ মণ পর্যন্ত আলুর উৎপাদন হতে পারে বলে তিনি জানান।
জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের প্রচুর মজুরি দিতে হয়।
পাশাপাশি উপজেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহজে চাষিরা যোগাযোগ করতে পারেন না।
আর সে কারণেই স্থানীয় মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে কম দামে আলু বিক্রি করতে হয়।
ফলে কৃষকের চেয়ে মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।
একই গ্রামের বাসিন্দা আলুচাষি ফরিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে সাত বিঘা জমিতে তিনি আলু চাষ করেছেন।
তবে বাজারে আলুর দরের অবস্থা নিয়ে তিনি চিন্তায় আছেন।
প্রতি কেজি আলুর বর্তমান বাজার দর ১১ টাকা করে।
এরপরও যদি প্রতিদিনই আলুর দর কমতে থাকে তবে ভালো ফলন হলেও খরচের টাকা উঠবে না।
উপজেলার অলুয়া গ্রামের কৃষক আইনুল হক এ ব্যাপারে জানান যে, চাষের শুরু থেকে আলু ওঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা।
তবে আগাম জাতের আলু চাষ করা কৃষকরা ইতিমধ্যেই বাজারে আলু বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন।
এ কৃষক জানান যে তখন বাজারে আলুর দাম বেশি থাকলেও দিনদিন আলুর দাম কমে যাচ্ছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হাসান।
তিনি বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১০৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে।
এতে আলুর খুব ভালো ফলনও হয়েছে এমনকি রোগবালাইও কম হয়েছে।
আগাম আলুর মত পরবর্তী সময়ও কৃষকেরা আলুর দাম পাবেন আশা করেন এ কর্মকর্তা।