Tuesday, 29 April, 2025

সর্বাধিক পঠিত

কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলন, চাষের অযোগ্য ২০০ একর


একটি শিল্পকারখানার অবকাঠামো নির্মাণে মাটি প্রয়োজন।সেই মাটি সরবরাহের ঠিকাদারি কাজ নিয়েছেন  হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। যথেষ্ট মাটির জোগান দিতে খনন করছেন হাওর অঞ্চলের কৃষিজমি। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ খননযন্ত্র দিয়ে কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলন হবার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষাবাদের জমি। এ অঞ্চলের অন্তত ২০০ একর জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে ।

সরেজমিনে মাধবপুর উপজেলায় গেলে দেখা যায় এ অবস্থা।  স্থানীয় কাষ্টি নদের পাশেই মাল্লা-ধনকুড়া বন্দ (হাওর) অবস্থিত, যার পাশেই মাল্লা-ধনকুড়া গ্রাম।  প্রায় ১০০ একর জমি নিয়ে এ হাওরের বাঁধ তৈরি করা হয়েছে।  বিশাল খাল খনন করা হয়েছে বাঁধের চারপাশ ঘিরে। এই খালে বসানো হয়েছে বালি তোলার ড্রেজার মেশিন ।  ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নোয়াপাড়া এলাকায় পাইপের সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উত্তোলন করা তরল মাটি।এই নোয়াপাড়া অঞ্চলে গড়ে ওঠা কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো স্থাপনে ব্যবহার করা হচ্ছে হাওরের এসব মাটি।

স্থানীয় লোকজন মারফত জানা যায় এ খনন কাজ শুরু হয় জুলাই মাস থেকে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে উত্তেলিত মাটি গতকাল সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ওরফে মামুন প্রায় ১০০ একর জমি থেকে মাটি নিচ্ছেন। যার কারণে আশপাশের আরও ১০০ একর জমি ক্ষতির মুখে পতিত হয়েছে।  জমিতে ফাটল দেখা দিচ্ছে, জমির উর্বতা হ্রাস পাচ্ছে। কৃষকরা জানান তারা মাধবপুর ইউএনও এর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে  এই অবস্থার প্রতিকার চেয়েছেন।

আরো পড়ুন
কালবৈশাখীর হাত থেকে রক্ষা পেতে পাকা ধান ঘরে তোলার পরামর্শ
দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়ায় কৃষিতে করনীয়

বর্তমানে চলছে বৈশাখ মাস, যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে ঝড়-বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ ধরনের আবহাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। Read more

বাদাম চাষে স্বপ্ন দেখছেন নবীনগরের কৃষকরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বাদাম চাষের সম্প্রসারণ ঘটছে। এবারের রবি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৮৫ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। নবীনগর পশ্চিম Read more

হাওরের কৃষকদের মারফত জানা যায়, কৃষির ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় দুই গ্রামের মানুষ ।  হাওরে ইউপি চেয়ারম্যানের নিজের কোন কৃষিজমি না থাকলেও তিনি সাধারণ কৃষকদের লোভ দেখিয়েছেন।  তিনি কৃষকদের বুঝিয়েছেন যে ধানের চেয়ে মাটি ব্যবসায় আয় বেশি।তাঁর কথামতো কয়েকজন মাটি ব্যবসায় এলেও যাঁরা আসেননি, তাঁদের জমিতে জোর করেছেন ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে ও অনেকটা জোর করে প্রায় ১০০ একর জমিজুড়ে বাঁধ তৈরি করেছেন চেয়ারম্যান।

যদিও বুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম এসকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কৃষিজমি থেকে মাটি তোলার কথা স্বীকার করলেও তার দাবি নিজের জমিতে পুকুর খনন করে মাটি উত্তোলন করছেন তিনি। নোয়াপাড়া এলাকায় একটি নতুন কারখানা স্থাপনে এই মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এতে হাওরের কৃষিজমির কোনো ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন না।

0 comments on “কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলন, চাষের অযোগ্য ২০০ একর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ