
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিশ্চিত করতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি আমদানি-রপ্তানিতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-এর নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেন।
আজ (বৃহস্পতিবার/যেদিন প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হচ্ছে) সকালে ঢাকার হোটেল ওয়েস্টিনে ব্রিটিশ হাই কমিশন আয়োজিত ‘ফ্লেমিং ফান্ড লেগাসি ইন বাংলাদেশ: ট্যাকলিং এএমআর থ্রু ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্য উৎপাদনে অ্যান্টিবায়োটিক ও পেস্টিসাইড নিয়ন্ত্রণ জরুরি
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিশেষ করে এসডিজি-২ বা ক্ষুধা দূরীকরণ নিশ্চিত করতে আমাদের দায়িত্ব কেবল খাদ্য উৎপাদন নয়। বরং খাদ্য উৎপাদন ও প্রাণিসম্পদ খাতে অ্যান্টিবায়োটিক এবং পেস্টিসাইডের সঠিক নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।
তিনি সতর্ক করে বলেন, সস্তা পোলট্রি উৎপাদনের জন্য অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপদেষ্টা মনে করেন, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
‘ওয়ান হেলথ’ পদ্ধতির মাধ্যমে এএমআর নজরদারিতে যুক্তরাজ্যের সহায়তা
উপদেষ্টা আরও জানান, যুক্তরাজ্য সরকারের ফ্লেমিং ফান্ড ২০২০ সাল থেকে ‘ওয়ান হেলথ’ পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশের এএমআর নজরদারি শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়ে আসছে। এই উদ্যোগের ফলে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষক, ভেটেরিনারিয়ান এবং মাঠ কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও দায়িত্বশীল অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারে সহায়ক হয়েছে।
তিনি ‘ওয়ান হেলথ’ কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, মানব স্বাস্থ্য, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি—সকল ক্ষেত্রকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এখানে কেউ কেন্দ্রে থাকবে না; সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করবে। নিরাপদ খাদ্য, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা
ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনের উপ-উন্নয়ন পরিচালক মার্টিন ডসন স্বাগত বক্তব্য দেন। বাংলাদেশে ফ্লেমিং ফান্ডের প্রধান সাফল্য নিয়ে উপস্থাপনা করেন ফ্লেমিং ফান্ড কান্ট্রি গ্রান্ট টু বাংলাদেশ (এফএফসিজিবি)-এর টেকনিক্যাল লিড ড. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী।
এফএফসিজিবি’র টিম লিড প্রফেসর শাহ মনির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনের উপ-হাই কমিশনার জেমস গোল্ডম্যান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মো. আবু জাফর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশে নিযুক্ত কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জিওকুন শি এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডা. মো. শামীম হায়দার।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গবেষক, বিজ্ঞানী এবং সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

