‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য খাতকে দেখেছিলেন দূরদৃষ্টি দিয়ে। স্বাধীনতাত্তোর তিনি বলেছিলেন ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ। জলাশয়ে মৎস্য অবমুক্ত করা, মৎস্য চাষিদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া, সমুদ্রে মৎস্য আহরণের জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ১০টি ফিশিং ট্রলার সংগ্রহ, বাণিজ্যিকভাবে বঙ্গোপসাগর হতে মৎস্য আহরণের লক্ষ্যে মেরিন ফিশারিজ ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং মৎস্য জরিপ কাজ শুরু করা ছিল তার অন্যতম দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পদক্ষেপ। তাই বঙ্গবন্ধু আমাদের পাথেয়, আমাদের আদর্শ, আমাদের দর্শন।’
শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: ইলিশ উৎপাদনে গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও জাটকা সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম এবং প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন ও মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ মোঃ ইমদাদুল হক ও শ্যামল চন্দ্র কর্মকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
মন্ত্রী আরো বলেন, জাটকা সংরক্ষণে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালে জেলেদের জন্য সরকার ভিজিএফ দিচ্ছে। পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি, ভ্যান বিতরণসহ নানা উপকরণ দিয়ে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জাটকা ধরা বেআইনী। তবু শেখ হাসিনা সরকার কেউ অনিয়মের মধ্যে থাকলেও তাকে বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ভালোভাবে পুনর্বাসন করতে চায়। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি সৎ, সাহসী, পরিশ্রমী রাষ্ট্রনায়ক। মানুষের জন্য কল্যাণকর পদক্ষেপ শেখ হাসিনা যা নিতে পেরেছেন, তা অতীতে কেউ করেন নি।
তিনি বলেন, বিএফআরআই-এর প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও মোহনা অঞ্চলে ইলিশ গবেষণার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন উন্নতমানের ভেসেল কেনা হয়েছে। এতে দেশের নদ-নদী এবং সাগর উপকূলে ইলিশ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা সম্ভব হবে। গবেষণালব্ধ ফলাফল ইলিশের সহনশীল উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে।
বিএফআরআই এর গবেষণা থেকে অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও নির্ধারিত সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখায় ইলিশের প্রজনন সফলতা এসেছে। সর্বশেষ ২০২০ সালে ২২ দিন নিষিদ্ধকালে ইলিশের প্রজনন হার ৫১ দশমিক ২ শতাংশ নিরূপন করা হয়েছে। গবেষণায় নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচনে মৎস্য বিজ্ঞানীদের কাজ করতে হবে। গবেষণা হতে হবে মানুষের কল্যাণে, দেশের স্বার্থে।