উত্তরের জেলা নীলফামারি। এই সময় নীলফামারীর বিভিন্ন মাঠজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই শুধু মন জুড়ানো সরিষা ফুলের দৃশ্য দেখা যায়। আর এই ফুলকে ঘিরে প্রতিদিন আনাগোনা করছে হাজার হাজার মৌমাছি ও প্রজাপ্রতি। তাদের আনোগোনা আকৃষ্ট করছে সৌন্দর্যপিপাসু দর্শনার্থীদের। এ বছর সরিষা চাষে ব্যাপক লাভ এর আশা করছেন চাষিরা। এই জেলায় প্রচুর সরিষা চাষ করা হয় প্রতিবছর। যা সরিষার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ মধুর উৎপাদন নিশ্চিত করে। সরিষা চাষে ব্যাপক লাভ এর আশা করার এটিও একটি বড় কারণ।
কৃষি বিভাগের সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স
জেরার কোথাও কোথাও জেলা কৃষি বিভাগের সরিষা ক্ষেত সমূহের পাশে সারি সারি মৌ চাষের বাক্স রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সরিষা চাষে ব্যাপক লাভ এর একটি অংশ হবে মধু আহরণ থেকে।
এসব বাক্সে সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণ করা হচ্ছে।
মৌমাছি বাসা তৈরি করছে এ সকল বাক্সে।
ধারণা করা হচ্ছে মাসখানেক পরেই মধু পাওয়া যাবে।
এবারই বৃহৎ পরিসরে সরিষা চাষ করা হয়
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবারেই প্রথম বৃহৎ পরিসরে সরিষা চাষ করা হয়।
প্রায় ৫৫৫০ হেক্টর জমিতে এবছর সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা।
কিছু কিছু জমিতে ইতিমধ্যেই মধু আহরণের জন্য চাষিরা মধু সংগ্রহ বাক্স বসিয়েছেন।
কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর আশা করে তেল বীজ, মধুর পাশাপাশি কৃষকরা সরিষা থেকে উন্নত গো-খাদ্যও তৈরি করতে পারবে।
সরেজমিন থেকে দেখা যায়, জেলার বিস্তীর্ণ মাঠ হলুদে ছেয়ে গেছে।
বিশেষ করে ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া ও মধ্যগয়াবাড়ী, দোলাপাড়া এলাকায় সরিষার প্রচুর পরিমাণ চাষ দেখা গেছে।
এলাকার একজন চাষি রশিদুল ইসলাম জানান আগে তিনি এই জমিতে তামাক চাষ করতেন তিনি।
পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তামাক চাষ থেকে সরিষা চাষে বেশি লাভ হয়।
অন্যদিকে তামাক খুবই ক্ষতি করে কিন্তু সরিষা তার উল্টো।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেন।
পাশাপাশি কিছু জমিতে ভুট্টা ও মৌসুমী ফসল চাষাবাদ করেছেন।
তিনি জানান এবছর তার ফলন খুবই চমৎকার হবার কারণে তিনি আশা করেন সরিষা চাষে তিনি লাভবান হবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক।
তিনি বলেন, তামাক চাষ থেকে কৃষকদের ফিরিয়ে আনার জন্য তারা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সরিষার বীজ, সার, মধু সংগ্রহ করার বাক্স ইত্যাদি উপকরণ প্রদান করে সহায়তা করা হয়।
সরিষা চাষ করে খুবই লাভবান হওয়া যায় বলেই তিনি জানান।
সরিষাফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা, সরিষার শাক, সরিষা থেকে ভালোমানের তেল উৎপাদন করা যায় সরিষা চাষে।
একই সাথে তেল নেওয়ার পর অবশিষ্ট অংশ খৈল হিসেবে গবাদি পশুকে খাওয়ানো হয়।
আশা করা হচ্ছে কয়েক বছর ফলন ভালো হলে আগামীতে আরো বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।