টানা কয়েক দিন ছিল চরম বৃষ্টিপাত। এতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। যদিও গত শুক্রবার থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এসব এলাকায়।
পানি এখনও বিপৎসীমার উপরে রয়েছে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে। এতে পানির নিচে রয়েছে শিবচর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৭০ বিঘা ফসলি জমি নদে বিলীন হয়েছে।
শিবচর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, উপজেল এবার ৬৪৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন, ৬৯৩ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ও ৫৩ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ করা হয়েছিল। সেসকল জমির সবটাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ
সন্ন্যাসীরচর এলাকার কৃষক রব মাতবর জানান তিনি এবার চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। ভালো ফলনের আশা করেছিলেন এ বছর। কিন্তু আকস্মিক প্লাবনে তার সব আশা শেষ, জমির সব ধান তলিয়ে গেছে।
উমেদপুরের কৃষক হুমায়ুন মৃধা। এবার ২ বিঘা জমিতে লাল শাক চাষ করেছেন। কিন্তু সেগুলো্ও তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
কৃষক রওশন ঘরামী আক্ষেপ করে বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে কৃষি অফিসারদের পরামর্শে উন্নত জাতের পেঁপে চারা রোপন করেছিলেন। ফল আসতে শুরু করলেও তিনি আশংকা করছেন যে বন্যা সব শেষ করে দেবে।’
শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, প্রান্তিক কৃষক বন্যার পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে চরাঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়নে । বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ধান ও শাকসবজির জমি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান, বন্যায় ফসলি জমির ক্ষতির সাথে সাথে রাস্তাঘাট থেকে ও মানুষের ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে শিবচরে বন্যাকবলিত এলাকায় সহায়তা দেয়া হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান যে, মাদারীপুরের বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতির দিকে। পানি কমতে শুরু করেছে গত শুক্রবার থেকে।
বর্তমানে নদীর পানি বিপদসীমার দেড় ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে শিবচরের চরাঞ্চলে। এতে পানি কমার লক্ষণ দেখতে পারছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।