পঙ্গপাল আতঙ্ক বাড়ছে, ভারত জুড়ে চলছে তান্ডব, আশঙ্কায় বাংলাদেশ
ভয় আগেও ছিল, তবে তা এখন প্রবল আতঙ্ক হয়ে গেছে। ঝড়ের তান্ডব যে ক্ষয়-ক্ষতি করেছে তাতে যেন মন ভরেনি প্রকৃতির। তাই শুরু হয়ে গেছে পঙ্গপাল ঝড়। পাকিস্তানের পর এবার ভারতজুড়ে তান্ডব চালাচ্ছে।খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে মধ্য ও উত্তর প্রদেশের একের পর এক জমি খেয়ে নাশ করে দিচ্ছে।
ওডিশা ও ভুপাল এর দিকে ধেয়ে আসছে ধীরে ধীরে। আতঙ্কিত এ পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলছে আমাদের দেশের সরকারকেও। করোনা, আমফান আর এবার পঙ্গপাল।
গেল বছর আর্মি ওয়ার্ম (ফসল ধ্বংসকারী পোকার জাত) আক্রমনে দেশের ৩১টি জেলার ভূট্টার জমি আক্রান্ত হয়েছিল। যদিও সরকারের তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণে কেবল ৪ শতাংশ ভূট্টার ক্ষতি হয়। তবে এ নিয়ে ভাবনার এখনও শেষ হয়নি।
এফএও থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েএর অনুরোধে ইতিমধ্যেই একটা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে যাতে পঙ্গপালের আশঙ্কা ও পতঙ্গ আক্রমণের পর কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে তা উল্লেখ করে। এফএওর বৈশ্বিক পঙ্গপাল পর্যবেক্ষণ বিষয়ক লুকাষ্ট ওয়াচ এ প্রতিবেদন তৈরিতে সর্বাত্মক সহায়তা করে।
এতে বলা হয় যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই আশংকা খুবই কম পরিমানে। সেক্ষেত্রে অযথা রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করার ব্যাপারে নিষেধ করেছে সংগঠনটির প্রতিবেদন।
কৃষিমন্ত্রি আব্দুর রাজ্জাক জানান যে পঙ্গপালের আক্রমনের আশঙ্কা বাংলদেশে নেই। হঠাৎ করে যদি চলে আসেও তবে মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। অপরদিকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইতোমধ্যেই পঙ্গপালের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে।
যাতে বলা হয়েছে, দেশের যে কোন স্থানে পঙ্গপাল দেখা গেলে তা অতিদ্রুত সরকারকে অবহিত করতে হবে। একই সাথে দমন, বালাইনাশক ব্যবহার ইত্যাদির বিষয়েও বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়েছে অধিদপ্তর।
উল্লেখ্য গত এপ্রিলে কক্সবাজার এর টেকনাফ অঞ্চলে পঙ্গপাল সদৃশ একধরনের পতঙ্গ দেখা দেওয়া নিয়ে আতঙ্গ সৃষ্টি হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় এ ধরনের আতঙ্কে পড়ে কৃষক যেন অযথা বালাইনাশক ব্যবহার না করে। বিশ্বব্যাপী পঙ্গপাল দমনে যেসকল বালাইনাশক ব্যবহার হয় তার সবগুলোই একই সাথে ফসল, মাঠ, পালিসহ আশেপাশের পরিবেশকেও মারাত্মকভাবে বিষাক্ত করে তোলে। তাই এ ব্যাপারে যথেষ্ট ভাবনা চিন্তা করে ও নিশ্চিত হয়ে তবেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মতে হাসপালন পঙ্গপাল দমনে বেশ কার্যকরী, কারণ এরা প্রচুর পঙ্গপাল খেতে পারে। ভারতের গুজরাটসহ অনেক রাজ্যই এ পদ্ধতি অবলম্বন করছে বলে তিনি জানান। যেহেতু বাংলাদেশে এর আক্রমনের আশঙ্কা কম, পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এখনই হাসপালন খুব ভাল ফল এনে দিতে পারে।
তবে পঙ্গপাল যেভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আক্রমন করছে তাতে বাংলাদেশকে ঝুকির বাইরে ভাবতে নারাজ সাধারণ মানুষ। অনেকের ধারণা যেহেতু ভারতে আক্রমন করে করে মাঠের পর মাঠ ফসল উজাড় হচ্ছে সেহেতু তা বাংলাদেশে যেকোন সময়ই হানা দিতে পারে। প্রতিবেশী ভারতের সীমান্তে এলেই তা অনায়াসে বাংলাদেশে আসবে।