Friday, 22 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ, তথ্য এফএওর প্রতিবেদনে


খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ এর বিশাল জনগোষ্ঠী। মাঝারি ও তীব্র খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ৫ কোটি ২০ লাখ মানুষ। ঝুঁকিতে থাকা লোকের সংখ্যাটি বেড়েছে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে। এই ২ বছরে নতুন করে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১২ লাখ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এর একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ পায়।  ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি পরিস্থিতি প্রতিবেদন-২০২১’-এ খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ এমনটিই উঠে এসেছে।

এই প্রতিবেদন গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে

২০২১ সালের পরিস্থিতি এফএওর প্রতিবেদনে উঠে আসেনি

আরো পড়ুন
দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে চমক দেখালেন কৃষক মুক্তার

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কৃষক মুক্তার হোসেন মোল্যা দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে উদ্ভাবনী সাফল্য দেখিয়েছেন। সালথা উপজেলা পাট উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত Read more

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে
স্বস্তি নেই সবজির বাজারে

রাজধানীর বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। একদিকে কিছু পণ্যের দাম কমলেও অন্যান্য অনেক পণ্যের দাম স্থিতিশীল Read more

২০২১ সালের পরিস্থিতি আসেনি এফএও প্রদত্ত এই প্রতিবেদনে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে এ বছর বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে অনেক।

চালের দাম আগে থেকেই বেশ চড়া।

সরকারের তুলনামূলক কম দামের দোকানে মানুষের দীর্ঘ লাইনই প্রমাণ দেয় মানুষের কষ্ট বেড়েছে।

সাবেক কৃষিসচিব এম এম শওকত আলী জানান যে, কেবল তথ্য প্রচারেই আছে দেশের প্রচুর খাদ্য উৎপাদন এবং খাদ্যের সংকট না থাকা।

কিন্তু বাস্তব তথ্য বলে যে, দেশ চাল আমদানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে।

তার মতে, দেশের সত্যিকার অর্থে খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে দ্রুত বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনা হওয়া দরকার।

না হলে  দেশে পুষ্টিহীনতা ও খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকি বেড়েই চলবে।

এফএওর প্রতিবেদনে ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পরিমাপক ধরা হয়েছে।

এই সময়ের খাদ্যনিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা ও হার এতে উঠে আসে।

প্রতিবেদনে কয়েক বছর ধরে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বলে ঊঠে আসে।

২০১৮ থেকে ২০২০ সময়ে খাদ্যনিরাপত্তার  ঝুঁকিতে ছিল ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।

অথচ ২০১৭ থেকে ২০১৯ সময়ে এটি ছিল আরও কম।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দেশের তুলনামূলক চিত্রও উঠে আসে এতে।

এতে দেখা যায় বাংলাদেশ নেপালের চেয়ে এগিয়ে আছে।

অন্যদিকে মিয়ানমার, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে আছে।

ভিয়েতনাম এ খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছে মাত্র সাড়ে ৬ শতাংশ মানুষ।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনি প্রতিবেদন দেখে পরে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

তবে অনুষ্ঠানে থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে অপারগতা জানান খাদ্যসচিব।

প্রকাশ করা হয় বৈশ্বিক খাদ্য ও কৃষি পরিস্থিতি-২০২১

এফএও পাশাপাশি ‘বৈশ্বিক খাদ্য ও কৃষি পরিস্থিতি-২০২১’ প্রতিবেদনও প্রকাশ করে।

এতে প্রাক্কলন করা হয়, বিশ্বে ২০২০ সালে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ থেকে ৮১ কোটির মতো।

আগের বছরের চেয়ে এটি প্রায় ১৬ কোটি বেশি।

এফএওর দুই প্রতিবেদনেই মূলত করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করা হয়েছে এই উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, করোনাকালে বিশ্বের বেশির ভাগ অঞ্চলে খাদ্যঝুকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।

এ সময় খাদ্য উৎপাদন, সরবরাহ ও বাণিজ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।

বিশেষ করে গ্রামীণ দরিদ্র ও দুর্গম এলাকার মানুষকে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়।

খাদ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়।

এতে বেশ কয়েকটি জরুরি খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে।

এতে আরও বলা হয়, ৩৭ কোটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যে খাবার পেত, তা আর পাচ্ছে না।

সেই সাথে পরিবার থেকেও সমপরিমাণ খাবার পাচ্ছে না তারা।

এতে তাদের পুষ্টিহীনতা বেড়েছে।

এফএওর প্রতিবেদনে নারী, শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাস্থ্যের দিক থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে।

বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে খর্বকায় শিশুর হার ২০১৫ সালে ৩৫ শতাংশ ছিল।

২০২০ সালে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে আসে।

তবে বাংলাদেশের ২ দশমিক ১ শতাংশ শিশু স্থূলকায়।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশের গর্ভবতী নারীদের ৩৬.৭ শতাংশ রক্তস্বল্পতায় ভোগে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহিন।

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে মানুষের আয় কমে যায়।

এতে খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির অনেক অবনতির তথ্য তারা জেনেছেন।

বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন করে কোথায় কোন ধরনের হস্তক্ষেপ ও সহযোগিতা দরকার, তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।’

0 comments on “খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ, তথ্য এফএওর প্রতিবেদনে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা