ওমর ফারুক সোহান একজন বৃক্ষপ্রেমী। তার স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা হয়েছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউভার্সিটি হতে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন ২০১৬ সালে। চাঁদপুরের জজ কোর্টে বছরখানেক শিক্ষানবিশ আইনজীবী ছিলেন। দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ‘গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি’(গবিসাস) এর দ্বিতীয় কমিটির (২০১৪-২০১৫) সভাপতি পদেও ছিলেন অধিষ্ঠিত। গবি সাংবাদিক সমিতির আজীবন উপদেষ্টা পদে আসীন এই ব্যাক্তি এখন নিজ এলাকায় নার্সারি ব্যবসা করছেন। আইনে পড়েও নার্সারি ব্যবসায় সফল এই উদ্যোক্তা।
সোহান এখন দুটি নার্সারির স্বত্বাধিকারী। একটি চাঁদপুর জেলা শহরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিবন্ধিত এপ্যোলো নার্সারি এবং অপরটি পুলিশ লাইন নার্সারি। জানতে চাইলে সোহান জানান প্রতিনিয়ত কৃষি সম্ভবনাময় বাংলাদেশ গড়ার জন্যে কাজ করছেন। তার মতে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করে নার্সারির পেশায় আশা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং।
দেশি-বিদেশি ৩০০ প্রজাতির গাছ আছে সোহানের নার্সারিতে। একজন দর্শনার্থী জানান চাঁদপুর জেলার সবচেয়ে বড় বাগান যাতে আছে সবধরনের গাছ। আপেল, আনার, তীন, জয়তুন, পার্সিমন, এবোকাডো, রামভুটান, ডুরিয়ান, আনার। নতুন নতুন জাতের কমলাসহ ৫০টিরও বেশি জাতের আম, চা পাতার গাছ, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ফল ইত্যাদি। অন্তত ১০০ রংয়ের গোলাপ চারা ইনডোর প্লান্ট, সাকুলেন্ট, গ্রিন লিফ, পিটুনিয়া, ক্যাকটাসসহ শত শত গাছ।
সোহানের ২ একর জমির দুটো নার্সারি গ্রীষ্মকালে আমের রাজ্যে পরিণত হয়। অনলাইনে মাল্টি গ্রাফটিং চারা ৬৪ জেলায় বিক্রি করেন তিনি। কৃষি সেবা দিতে ফেসবুক পেজ খুলেছেন।
আইনে পড়েও নার্সারি ব্যবসা
আইনে পড়েও নার্সারি ব্যবসা প্রসঙ্গে সোহান জানান, তার বাবা দেলোয়ার চৌধুরী নার্সারি ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে একদম নতুন প্রজাতির গাছ এমনও জাতের চারা নার্সারিতে আছে।
উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাতৃ গাছ থেকে সায়ন সংগ্রহ করে সোহান নতুন চারা তৈরি করেন। এটি কৃষি সম্ভবনাময় বাংলাদেশের জন্য বিদেশি ফল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সোহানের পারিবারিক এই ব্যবসার বয়স ২০ বছর। পুলিশ লাইনের পরিত্যক্ত ডোবাটিকে তৎকালীন দায়িত্বরত পুলিশ সুপার (এসপি) আমির জাফর নার্সারি করার অনুমতি দেন।
২৯ বছর বয়সী এই উদ্যোক্তা জানান টাকশালের উৎপাদন শাখার পরিচালক তার চাচা। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মাধ্যমে আইন বিভাগে ভর্তি হন তিনি। পলাশ, শিমুল, বকুল আপেলসহ নানা ধরনের গাছ রোপণ করেছিলেন তিনি।
বর্তমানে তার নার্সারিতে ১০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। করোনার সময়ে জেলা প্রশাসন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। মহামারিতে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দেন নিজ উদ্যোগে।