১০০ হেক্টর রোপা-আমনের বীজতলা ডুবে গেছে। এমনটা ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর অঞ্চলের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকায়। বেড়িবাঁধের ভেতরের এলাকায় টানা বৃষ্টির ফলে পানি জমে। নিষ্কাশিত না হওয়ায় ডুবে গেছে বীজতলা, আমনের চারা প্রায় মরার পথে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে (জুলাই থেকে অক্টোবর) ৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে।তাই স্থানীয় কৃষকেরা প্রায় ৩৮৫ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা তৈরি করেন ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বরাতে জানা যায়, এ পর্যন্ত কৃষকেরা ১০৫ হেক্টর জমিতে বেড়িবাঁধটির ভেতরে বীজতলায় চারা রোপণ করেছেন। যার ১০০ হেক্টর জমিই পানির নিচে ডুবে গেছে। কৃষি কর্মকর্তার অভিযোগ, একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হলেও পানিনিষ্কাশনে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ উদাসীনতা দেখাচ্ছে। দেখা যায়নি পানি সরানোর কোনরকম কোন উদ্যোগ। চলতি মৌসুমে আমন চারার সংকট দেখা দেবে বলে আশংকা করছেন তিনি। স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও তিনি চিঠির কপি দিয়েছেন।
রোববার সরেজমিনে গেলে দেখা যায় উপজেলার সিপাইকান্দি, ঠেটালিয়া, ফতেপুর, লুধুয়া,চরহরিঘোষ, গজরা, ফরাজীকান্দি, রাঢ়িকান্দি ওআমুয়াকান্দা এলাকার বীজতলা তলিয়ে গেছে। পানিতে ভেসে থাকতে দেখা গেছে শেওলা । ফতেপুর এলাকার একজন কৃষক জানান, প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ জমি আমনের আবাদ করবেন বলে দুটি বীজতলা করেছেন। কিন্তু এখন তার চারায় পচন ধরেছে।
তার দুশ্চিন্তা দ্রুত পানি না সরালে সব চারা নষ্ট হবে।
ফতেপুর, ঠেটালিয়া ও সিপাইকান্দি এলাকার সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবহারকারী দলের সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, বাধের ভেতরের পানিনিষ্কাশন খাল অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা । সেগুলো ভরাট করে তারা করেছেন বাড়িঘর, স্থাপনা ও ব্যক্তিগত রাস্তা। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে এসব দখলদারদের উচ্ছেদে পাউবোর প্রকৌশলীরা নীরব ভূমিকা পালন করছেন। আর এই প্রশ্নবিদ্ধ নীরবতার মাশুল দিচ্ছেন কৃষকেরা।
দায়িত্বরত পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান পাউবোর আটটি পাম্পহাউস বেড়িবাঁধটির ভেতরে জলাবদ্ধতা সরাতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন যে কিছু নিষ্কাশন খাল ভরাট ও বেদখল থাকায় সব পানি সরানো যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান যে দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু হয়েছে।কিন্তু চলমান বিধিনিষেধের কারণে সেটি স্থগিত রয়েছে। বিধিনিষেধ শেস হলে উচ্ছেদ অভিযান পুনরায় চালানো হবে বলে তিনি জানান।