Saturday, 12 April, 2025

সর্বাধিক পঠিত

‘পুষ্টির ডিনামাইট’ সজিনা চাষ পদ্ধতি


সজিনা (Moringa oleifera) একটি দ্রুতবর্ধনশীল, পুষ্টিকর গাছ যা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক অঞ্চলে চাষ করা হয়। সজিনা গাছের পাতা, ফল এবং ফুলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে, যা বিভিন্ন খাদ্য এবং ঔষধি গুণাগুণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

সজিনার পাতা, শিকড় এবং অপরিণত শুঁটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এছাড়া এই গাছের বাকল, শুঁটি, পাতা, বাদাম, বীজ, কন্দ, শিকড় এবং ফুলসহ গোটা অংশই খাওয়া যায়।

আরো পড়ুন
কক্সবাজার উপকূলে ১০ হাজারের বেশি কচ্ছপের বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত

চলতি মৌসুমে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন উপকূলে কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও বাচ্চা প্রজননে তৎপরতা বেড়েছে। বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বেসরকারি সংস্থা Read more

হালদা নদীতে মা মাছের আগমন, ডিম আহরণে প্রস্তুতি তুঙ্গে
হালদার মা মাছ

চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছের আনাগোনা শুরু হয়েছে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুরুতে এই নদীতে ডিম Read more

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত জন হপকিন্স ম্যাগাজিনে সজিনাকে শুষ্ক ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অপুষ্টি প্রতিরোধে ‘শক্তিশালী অস্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

সজিনা চাষের পদ্ধতি নিচে তুলে ধরা হলো:

১. জমি প্রস্তুতি

সজিনা চাষের জন্য উঁচু, পানি নিস্কাশনের ভালো সুবিধা আছে এমন বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযুক্ত। জমি ভালোভাবে চাষ করে মাটি ঝুরঝুরে করতে হবে। জমির অম্লতা বা ক্ষারত্বের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। জমি তৈরির সময় গোবর বা কম্পোস্ট সার মিশিয়ে নিতে হবে।

২. চারা রোপণ

  • বীজ থেকে: বীজ থেকে চারা তৈরি করতে হলে বীজের খোসা ফেলে বীজ বপন করতে হয়। বীজ সাধারণত মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে রোপণ করতে হয়। বীজ থেকে চারা গজানোর সময়কাল ৭-১২ দিন।

Moringa Seeds

  • কাটিং থেকে: সজিনা চাষে ডাল বা কাটিং ব্যবহার করা যেতে পারে। ৩-৫ ফুট লম্বা এবং ১-২ ইঞ্চি মোটা ডাল নির্বাচন করে রোপণ করা হয়।

৩. চারা রোপণের দূরত্ব

চারা রোপণের জন্য সাধারণত ৬-৮ ফুট দূরত্ব রাখা হয়। খাড়া চারা গাছ ১০-১৫ ফুটের মধ্যে বেড়ে ওঠে, তাই গাছগুলির মধ্যে পর্যাপ্ত জায়গা রাখা উচিত।

৪. সেচ ও পরিচর্যা

  • সজিনা গাছের জন্য খুব বেশি পানি প্রয়োজন হয় না, তবে গরম ও শুষ্ক মৌসুমে সেচ প্রদান করতে হবে।
  • অতিরিক্ত আগাছা পরিস্কার করতে হবে যাতে গাছের সঠিক বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং আলো পায়।
  • গাছের গোঁড়ায় প্রাকৃতিক সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

৫. পোকামাকড় ও রোগবালাই

সজিনা গাছে সাধারণত খুব কম পোকামাকড় আক্রমণ করে। তবে মাঝে মাঝে পাতায় ছত্রাকজনিত রোগ দেখা দিতে পারে। এ ধরনের রোগ হলে জৈব কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

৬. ফল সংগ্রহ

সজিনার ফল সাধারণত ৬-৮ মাস পর সংগ্রহ করা যায়। তবে পুর্ণবয়স্ক গাছ থেকে প্রতি ৩-৪ মাস পরপর ফল সংগ্রহ করা যায়। পাতা এবং ফুলও প্রয়োজন অনুসারে সংগ্রহ করা যেতে পারে।

সঠিক পরিচর্যা এবং সময়মতো সংগ্রহ করলে সজিনা গাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদী ফলন পাওয়া সম্ভব।

0 comments on “‘পুষ্টির ডিনামাইট’ সজিনা চাষ পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ