চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে নরসিংদী জেলায়। এই জেলার সকল উপজেলা ও বাজারে পাটের ভালো দাম পাচ্ছেন, এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি বছরে নদীর চরাঞ্চল এবং উঁচু জমিগুলোতে পাট চাষাবাদ বেশি হয়েছে। জেলার রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে বিভিন্ন ইউনিয়নে সরাসরি ঘুরে আশানুরূপ পাট চাষ দেখা গেছে।
কমেছে পাটের চাষাবাদ
রায়পুরা উপজেলার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাট চাষে খরচ অনেক বেশি। বিগত কয়েক বছর ধরে পাটের দাম ভালো না। যার ফলে কৃষকেরা পাট চাষাবাদ আগের থেকে অনেক কমিয়ে করছে। তিনি জানান আগে যেখানে ২/৩ বিঘা জমিতে পাট চাষাবাদ করতেন সেখানে এ বছর ১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এতে অবশ্য পাটের ফলন ভালো পেয়েছেন তিনি। তিনি আশা করছেন বতর্মান বাজারে পাটের দাম ভালো থাকায়, তাই এ বছর লাভের মুখ দেখবেন।
তিনি আরও জানান, নদীর চর অঞ্চলে ধান চাষ করা যায় না। সেকারণে এলাকার কৃষকরা এসব জমিতে পাটসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষ করেন।
উপজেলা কৃষি অফিস এর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা চলতি মৌসুমে ১৬শ হেক্টর জমি ছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অজির্ত হয়েছে ৮৪৫ হেক্টর। এর মধ্যে ৪০ হেক্টর জমিতে দেশীয় জাতের পাট চাষাবাদ হয়েছে। অন্যদিকে ৮০৫ হেক্টর জমিতে তোষা জাতের পাট চাষাবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যেই কৃষকরা বাজারে নতুন পাট তুলতে শুর করেছেন।
বতর্মান পাটচাষে খরচ বেশি হবার কারণে কৃষকরা পাট চাষাবাদ করেন না। বরং অধিক লাভের আশায় সবজি চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন সকলে।
পুটিয়া হাট-বাজার সম্পূর্ণ ঘুরে দেখা যায় বাজারে নতুন তোষা জাতের পাট মণ প্রতি ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হচ্ছে । নতুন পাটের বাজার দর ধান ও গমের থেকে দাম বেশি এ বছর। এতে এলাকার পাট-চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
সদর উপজেলার কৃষি অফিসার জানান যে, চলতি মৌসুমে পাট চাষাবাদের সময় অধিক বৃষ্টিপাত হয়। এতে এ বছর পাট চাষাবাদ কিছুটা কম হয়েছে। পরবর্তীতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ বছর পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে এলাকার কৃষকদের পাট কেটে জাগ দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। তাছাড়া পাটের দামও বাজারে ভালো রয়েছে । শেষ পযর্ন্ত বাজার দর ভালো থাকলে আগামীতে পাট চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে এ কর্মকর্তা মনে করেন।