পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগন চাষ করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা লাভবান হয়েছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কৃষক চাঁন মিয়া।
গত ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে বাড়ির পাশে মাত্র ১০ শতাংশ পতিত জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে এ সফলতা পেলেন তিনি।
সম্প্রতি তার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটিতে পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষপদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। আগতদের মধ্যে যারা শখের বসে ড্রাগন চাষ করতে চাচ্ছেন তাদের মাঝে তিনি চারা সরবরাহ করছেন।
চাঁন মিয়া বলেন, চারা রোপণের এক বছর তিন মাসের মাথায় গাছে ফল আসে। এসব ফল আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের খাওয়ানোর পরও বিক্রি করে প্রায় এক লাখ টাকা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ভালো ফলন ও লাভবান হওয়ায় এবার তিনি উপজেলার কুন্দগ্রাম ইউনিয়নের কড়ইগ্রামের কারিউল ইসলাম নামের এক কৃষকের সাথে ১৫ বিঘা জমিতে যৌথভাবে ড্রাগন চাষে নেমেছেন।
দ্বিতীয় বারের মতো ২০১৯ সালের শেষের দিকে অন্যের জমি লিজ নিয়ে তারা ড্রাগন চাষাবাদ শুরু করেছেন। বাগান সৃজনের বিপরীতে প্রতিবিঘায় এবার তাদের খরচ হয়েছে ৮০-৯০ হাজার টাকা। চলতি বছরের শেষের দিকে ফল পাবেন বলে তারা আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, ড্রাগন গাছের রোগ-বালাই কম, কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। ফলে ড্রাগন চাষে ঝুঁকি কম, ফলের দামও বেশি দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি ব্যাংক অথবা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ড্রাগন চাষের বিপরীতে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে কৃষকরা ড্রাগন চাষে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, চাঁন মিয়ার ড্রাগন চাষ অন্যদের উৎসাহ দিচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষে থেকে তাকে পরামর্শ দেওয়া এবং তার বাগানে নজরদারি রয়েছে। তা ছাড়া সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়।
তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। সিমেন্ট অথবা বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০-৬০০ গ্রাম। ১২-১৮ মাস বয়সী একটি গাছে ৫-২০টি ফল ধরে। পরিপক্ব একটি গাছে সর্বোচ্চ ৮০টি ফল পাওয়া যায়। ছাদবাগানের টবেও ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায়।