
হাওর অঞ্চলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ রক্ষায় কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশকের ব্যবহার সীমিত করার জন্য গঠিত জাতীয় কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় হাওরের পরিবেশগত ভারসাম্য, মাছের প্রজননক্ষেত্র এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কীটনাশকের বহুমাত্রিক ঝুঁকি
সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, কৃষি ও পশুপালনে ব্যবহৃত কীটনাশক মাছ, জলজ বাস্তুতন্ত্র, পশুপাল এবং মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। বৃষ্টি এবং বাতাসের মাধ্যমে এই রাসায়নিকগুলো নদী, খাল ও পুকুরে প্রবেশ করে মাছের প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, খাদ্যশৃঙ্খল নষ্ট করে এবং মাছের পুষ্টিগুণ হ্রাস করে। এছাড়া, মাছ, দুধ, ডিম এবং মাংসের মাধ্যমে এই রাসায়নিকের অবশিষ্টাংশ মানবদেহে প্রবেশ করে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
বক্তারা আরও বলেন, এই সমস্যা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করা এবং কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। একইসাথে, শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণও জরুরি।
কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে?
সভায় কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটি কার্যকর পরিকল্পনা বা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে তা সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কীটনাশকের ব্যবহার পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
এই সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো: তোফাজ্জেল হোসেন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।