Saturday, 27 September, 2025

নতুন উদ্ভাবিত এমসিটিসি জাত এর মুরগী হবে অধিক লাভজনক


বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) নতুন এক মুরগির জাত উদ্ভাবন করেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন এই মুরগি কম সময়ে অধিক মাংস দিতে সক্ষম হবে বলে। ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন’ (এমসিটিসি) নতুন উদ্ভাবিত এই মুরগির জাতের নামকরণ করা হয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত এমসিটিসি জাত এর মুরগী অন্য মুরগী থেকে লাভজনক।

মুরগির নতুন এ জাত উদ্ভাবনের গবেষণায় বিএলআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আতাউল গনি রাব্বানী  অংশ নিয়েছিলেন। তিনি জানান যে, দেশি মুরগির মতোই হবে এই মুরগির মাংসের গুণাগুণ । এই জাত এর উদ্ভাবন হয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রেক্ষাপটেই।

নতুন জাতের মুরগী হবে আরও লাভজনক

আরো পড়ুন
ধানের বাম্পার ফলন: ফুল ফোটার সময় কৃষকের করণীয়

বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। এ দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এই ফসলের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ধানের ফলন বাড়াতে হলে এর Read more

ঢাকায় শুরু হলো আগ্রোফরেস্ট্রি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং গ্রামীণ জীবিকা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ বৈঠক। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) Read more

গবেষণা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা হয়। তারা বলছেন, নতুন এ জাতের মুরগির মাংসের স্বাদ দেশি মুরগির মতো। আবার এই মুরগি দেখতেও অনেকটা দেশি মুরগির মতো। আকারে ও রঙে একই হওয়ায় এটি উৎপাদনের মাধ্যমে খামারিরা লাভবান হবেন। এর কারণ হিসেবে তারা সোনালি কিংবা কক এর মতো অন্য মুরগি থেকে এ মুরগি বিক্রিতে দাম বেশি পাবেন বলে।

নতুন এই এমসিটিসি জাতের মুরগি পালনে ঝামেলা কম। জায়গার পরিমাণ, ব্রিডিং, তাপমাত্রা, আলো ও বায়ু ব্যবস্থাপনা অন্যান্য মুরগির মতোই লাগে। এই জাতের মুরগীর মৃত্যুর হার খুবই কম হয়। যার ফলে এটি খামারিদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা হবে।

বিএলআরআই সংশ্লিষ্টরা জানান যে মাঠ পর্যায়ে এই মুরগি চাষ সম্প্রসারণ করা হবে। এই লক্ষ্যে ধারাবাহিক গবেষণার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই কিছু বিষয় মূল্যায়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে উৎপাদন, অভিযোজন ক্ষমতা, মৃত্যুহার, রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব ইত্যাদি বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে বাণিজ্যিক খামার পর্যায়ে মূল্যায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এরই প্রথম ধাপ হিসেবে ‘আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড কোম্পানি’র সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় । তাদের সঙ্গে যৌথ গবেষণা এখনও চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।

খামার পর্যায়ে সম্প্রসারণ সফলভাবে করতে পারলে খামারিরা লাভবান হবে। প্রান্তিক খামারিরা একদিকে স্বল্পমূল্যে অধিক মাংস উৎপাদনকারী জাতের বাচ্চা পাবেন। অপরদিকে এর ফলে আমদানি নির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। এতে মুরগির বাচ্চা ও মাংসের বাজার মূল্যের উত্থান-পতন নিয়ন্ত্রণ করা অনেকাংশে সম্ভব হত। সেইসাথে দেশের সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় প্রাণিজ আমিষসহ অন্যান্য পুষ্টির চাহিদা পূরণে এ জাতের মুরগি অনন্য ভূমিকা রাখবে।

গবেষণা সংশ্লিষ্টরা জানান এমসিটিসি জাতের মুরগির ওজনও দ্রুত বাড়বে। এই মুরগির গড় ওজন হবে ৯৭৫ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত, সেটাও কেবল ৫৬ দিনে । অন্য জাতের মুরগির প্রায় তিনমাস লেগে যায় এই পরিমাণ ওজন হতে।

0 comments on “নতুন উদ্ভাবিত এমসিটিসি জাত এর মুরগী হবে অধিক লাভজনক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ