Thursday, 16 October, 2025

জমির উর্বরতায় কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি এবং ব্যবহার


জমির উর্বরতায় কেঁচো সার (Vermicompost fertilizer) এর ব্যবহার প্রচুর পরিমানে বেড়েছে এখনকার সময়ে। এটি একটি জৈব সার যা প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি করা হয় ।

গোবর বা তরকারির ফেলে দেওয়া অংশ, ফলমূলের খোসা, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, ইত্যাদি খেয়ে কেঁচো মল ত্যাগ করে এই সার তৈরি হয়। আবার কেঁচোর দেহ থেকে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বের হয়। এই পদার্থ বের হয়ে যে সার তৈরি হয় তাঁকে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট বলা হয়।

সব ধরনের ফসল ক্ষেতে এই সার ব্যবহার করা সম্ভব। পরিবেশবান্ধব সারটি অধিক ব্যাবহৃত জৈব সারের মধ্যে অন্যতম।

আরো পড়ুন
১ লাখ ৩০ হাজার টন সার কিনছে সরকার, মোট ব্যয় ৭২২ কোটি টাকা
এক লাখ ৩০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে রাষ্ট্রীয় চুক্তিতে কানাডা, মরক্কো এবং উন্মুক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে সৌদি আরব ও কাফকো Read more

কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: কৃষকের করণীয়
কৃষিতে জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে কৃষকের চিন্তা

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে, যার ফলে ফসলের উৎপাদন হ্রাস, নতুন রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা Read more

কিভাবে কেচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করা হয় ?

(১) কেঁচো কম্পোষ্ট কিছু ধাপে তৈরি করা হয়। প্রথমে একটি গর্ত তৈরি করা হয়। এসব গর্তগুলো আমের পাতা বা খামারের ফেলে দেয়া অংশ বা ঘাস ইত্যাদির যেকোন একটি ছোট ছোট করে কেটে পূর্ণ করে দিতে হয়।

(২)আবর্জনা গর্তে ফেলার আগে গর্তটি পলিথিন দিয়ে মুড়ে নিতে হবে। যার ফলে কেঁচো পিট থেকে বাইরে বের হতে পারবে না।

(৩) কেচোঁ কম্পোস্ট তৈরির জন্য প্রথমেই পলিথিন বিছানোর পরে গর্তের নিচে ৬ ইঞ্চি পুরু করে বেড বানাতে হবে।

বেড তৈরির জন্য ভালো মাটি ও গোবর সমপরিমাণে মিশাতে হবে। মিশানো গাবর ও মাটি পরে কেঁচোর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

(৪) কম্পোস্ট তৈরির কাজে দুই ধরণের কেঁচোর জাত রয়েছে- এন্ডোজিকও এপিজিক নামের।

লাল রঙের জাতগুলো এপিজিক, বিচরণ মাটির উপরের স্তরেই। ছাই রঙের জাতগুলো এন্ডোজিক, কাজ মাটির ভৌত ও জৈব গুণাবলির উন্নতি করা।

(৫) গর্তটি মাটি ও গোবর দিয়ে ভর্তি করার কেচো প্রয়োগ করতে হয়।২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১ মিটার প্রস্থ মাপের পিটে অন্তত ৫০০ টি কেঁচো প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

২ ইঞ্চি পুরু করে জৈব সার এবং তার উপরি অংশে ৪ ইঞ্চি পুরু করে কাঁচা পাতা দিয়ে দিতে হবে। গর্তের উপরে ভিজানো চট দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

দৈনিক ২ বার করে জল ছিটাতে হবে। যতদিন না কাঁচা পাতা কালো বর্ণ ধারণ করে জল দিতে হবে। এক মাস পরে আবার কাঁচা পাতা দিতে হবে। আবার চট দিয়ে ঢেঁকে ভিজিয়ে রাখতে হবে।

কাচা পাতা দিতে হবে ৪ দিন পর পর । ৬ সপ্তাহ পর হলে চালনি বা নেট দিয়ে চেলে কেঁচো আলাদা করে নিতে হবে।এবার সার ব্যবহার বা বাজারজাত করার জন্য উপযোগী।

সারের গুণগত মান বজায় রাখতে চাইলে গর্তের উপরিভাগে ছায়া প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যে তাপমাত্রা এবং মাটি র তারতম্যের কারণে কেঁচো মারা যেতে পারে। সে কারণে কেঁচো উৎপাদনে বিশেষ ও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।

(৬) নিয়মিতভাবে কেচোর খাবার সরবরাহ করতে হবে।

(৭) চালুনি দিয়ে চালার সময় কেচো যেন মরে না যায় খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলো আবার ব্যবহার করার ব্যবস্থাকরতে হবে।

কেঁচো কম্পোস্ট সারের উপকারিতা :

উৎপাদন ও ফসলের গুণাগুণ বৃদ্ধি পায়। তুলনামূলকভাবে উৎকৃষ্ট ও বড় আকারের ফল বা সবজি পাওয়া যায়। মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে কেঁচো সার ব্যবহারে সেচের পানি কম লাগে। ক্ষারীয় লবণাক্ত মাটিতেও চাষাবাদ সম্ভব।

0 comments on “জমির উর্বরতায় কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি এবং ব্যবহার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ