বাঁধাকপি একটি শীতকালীন সবজি। বর্তমানে বাজারে প্রচুর পরিমাণে এ সবজিটির চাহিদা রয়েছে। চাহিদা প্রচুর পরিমাণে থাকায় এর প্রচুর চাষও হচ্ছে। কিন্তু বাঁধাকপির ক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকা আক্রমণ করে থাকে। অনেক কৃষকই তাদের আশানুরূপ ফসল পান না। যার প্রধান কারণ বাঁধাকপির রোগ ও পোকা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে না জানার কারণে। বাঁধাকপি চাষের ক্ষেত্রে রোগ ও পোকামাকড় দমনের কৌশল সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। তাই বাঁধাকপির রোগ ও পোকা দমনে করণীয় সম্পর্কে তাই চলুন জেনে নিই।
কি ধরণের রোগ ও পোকা আক্রমণ করে
সাধারণত নিম্নোক্ত ধরণের রোগের আক্রমণ দেখা যায়-
ক. বাঁধাকপির কালো পচা রোগ: এটি বাঁধাকপির খুবই সাধারণ একটি রোগ।
প্রতিকার হিসেবে বীজ বপনের পূর্বে বীজ শোধন করে নিতে হয়।
৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার গরম পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে।
ক্ষেতের আগাছা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
নিয়মিত এবং অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে জমিতে।
খ. বাঁধাকপির চারা ধ্বসা রোগ: এটিও বাঁধাকপির সাধারণ রোগ।
এ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য জমিতে সরিষা খৈল প্রয়োগ করতে হয়।
একরপ্রতি ১০০ থেকে ১২৫ কেজি সরিষা খৈল প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যায়।
ঢলে পড়া চারা দেখা গেলে সাথে সাথেই তা তুলে ধ্বংস করতে হবে।
জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার ও পরিমিত ইউরিয়া ব্যবহার করতে হয়।
জমি সবসময় আর্দ্র বা ভিজা না থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
জমিতে সুষ্ঠু পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
গ. পাতায় দাগ পড়া রোগ: বাঁধাকপির পাতায় এক প্রকার দাগ দেখা যায়।
এ রোগের প্রতিকারের জন্য সুষম সার ও সেচের ব্যবস্থা রাখতে হয়।
তাছাড়া সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে বাঁধাকপির চারা রোপণ করতে হবে।
রোগের প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে কীটনাশক ২ সপ্তাহ পরপর স্প্রে করতে হবে।
বাঁধাকপির ক্ষেতে কিছু ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে থাকেন-
১. কাটুই পোকা: কাটুই পোকার আক্রমণ হলে গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়।
প্রতি সারিতে উপর দিয়ে গাছের গোড়া বরাবর ভালোভাবে মাটিকে ভিজিয়ে নিতে হবে।
স্প্রে শেষে গাছের গোড়ার দিকে মাটি তুলে দিতে হবে।
২. লেদা পোকা: লেদা পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া কষ্টকর।
সম্ভব হলে কীড়া ও ডিম সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
এছাড়া গাছে কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
এরপর গাছে ভালোভাবে সেটা স্প্রে করতে হবে।
২. বাঁধাকপির সরুই পোকা: বাঁধাকপির ফসল সংগ্রহের পর ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
তার পরেই জমি খুব ভালো করে চাষ করতে হবে।
সম্ভব হলে কীড়া এবং ডিম হাত দিয়ে পিষে মারতে হবে।
কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।