Tuesday, 09 December, 2025

প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে জোর, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে খামারিদের প্রশিক্ষণের আহ্বান


শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, খাদ্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করাও জরুরি। বরিশালে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এই মন্তব্য করেন। তিনি প্রাণিসম্পদ খাতের কর্মকর্তাদের খামারিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ আমিষ উৎপাদনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

সোমবার সকালে বরিশালের হোটেল গ্র্যান্ড পার্কে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিভাগীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব

আরো পড়ুন
পাহাড়ে বারি-৪ লাউ চাষে সাফল্য: কাপ্তাইয়ের রাইখালী গবেষণা কেন্দ্রে বাম্পার ফলন
লাউ চাষের বাম্পার ফলন

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলাস্থ রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (পিএআরএস) বারি-৪ জাতের লাউ চাষে বড় ধরনের সাফল্য Read more

সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান

বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে সকল পক্ষের স্বার্থকে সমন্বিত করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি Read more

উপদেষ্টা বলেন, “হাসপাতাল বাড়িয়ে লাভ নেই, যদি আমরা খাদ্য নিরাপদ রাখতে না পারি।” তার মতে, নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, প্রাণিজ আমিষ, বিশেষ করে দুধ ও ডিম শিশুদের জন্য অপরিহার্য। স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ২০০ মি.লি. দুধ সরবরাহ করার ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শারীরিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দুধ উৎপাদন ও আমদানি হ্রাস

উপদেষ্টা জানান, দেশে দুধের ঘাটতি রয়েছে এবং তা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন বাড়ানো গেলে আমিষ ও প্রাণিজ খাদ্যের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি আমদানিও বন্ধ করা সম্ভব হবে।

বরিশাল বিভাগের সম্ভাবনা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই এলাকায় গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং মহিষ পালনের বড় সুযোগ রয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির লক্ষ্যে মহিষের দুধ উৎপাদন ও লালন-পালন বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

খামারি ও তরুণদের প্রতি আহ্বান

উপদেষ্টা জানান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিদ্যুৎ বিল কৃষিখাতের মতো কাঠামোয় আনার বিষয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তিনি দানাদার খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ঘাস উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করবে।

নারী খামারিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পশুপালনে নারীদের আরও এগিয়ে যেতে হবে এবং প্রকল্পের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। তরুণদের প্রতি তার আহ্বান, শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। তরুণরা আন্দোলনের মাধ্যমে যেমন দেশের চরিত্র বদলে দিয়েছে, তেমনি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

কর্মশালার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া, অধিদপ্তরের পরিচালকবৃন্দ, এলডিডিপি প্রকল্পের কর্মকর্তারা, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এবং প্রকল্পের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় প্রকল্পের কার্যক্রম, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কর্মশালা শেষে উপদেষ্টা বরিশাল জেলার বিভিন্ন দুগ্ধ ও প্রাণিসম্পদ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

0 comments on “প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে জোর, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে খামারিদের প্রশিক্ষণের আহ্বান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ