Monday, 12 May, 2025

সর্বাধিক পঠিত

প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্প জাতীয় মাছ চাষে নতুন সম্ভাবনা


কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প প্রভৃতি কার্প জাতীয় মাছের গবেষণা কার্যক্রমে সফলতা ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে বলে দাবি করেছেন একদল গবেষক।

তিন বছর ধরে চলা নতুন এই কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি উপ-প্রকল্পের প্রধান গবেষক হলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) একুয়াকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক এবং সহকারী প্রধান গবেষক হিসেবে আছেন ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল আলম।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম-ফেজ ও (এনএটিপি ২) এর পিবিআরজি প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় ওই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।

আরো পড়ুন
বোরো ধানের দাম বেড়ে কৃষকদের মুখে হাসি

গত বছরের তুলনায় এবার বোরো ধানের চাষাবাদে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি বিপণন বিভাগ (ডিএএম) এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে Read more

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ফসলের উৎপাদন কমছে: গবেষণা

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা ও খরার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ফসলের উৎপাদন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। Read more

গবেষকরা জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্যচাষিরা সাধারণত ছোট আকারের এই জাতীয় মাছ পুকুরে মজুদ করেন। এই ছোট আকারের মাছগুলোর বাজারজাতের উপযোগী হতে সাধারণত ২-৩ বছর সময় লাগে। এছাড়া ছোট আকারের মাছ পুকুরে মজুদ করলে মাছের মৃত্যুহারও অধিক হয়। কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তিতে সাধারণত বড় আকারের যেমন ৪-৬ শত গ্রাম ওজনের কার্প জাতীয় মাছ পুকুরে মজুদ করা হয়। এতে প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি সম্পূরক খাদ্য প্রযোগ করে ৭-৮ মাসেই মাছ বাজারজাত করা হয়। যা দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্যচাষিদের কাছে ছিল অকল্পনীয়। কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তিতে মৎস্যচাষিরা মাছ চাষ করে অল্প সময়ে অধিক পরিমান মাছ উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া চাষিদের মধ্যে মাছ চাষের ব্যাপক আগ্রহও সৃষ্টি হয়েছে।

কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তিতে গবেষকরা ২টি গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। প্রথম গবেষণাতে পানির স্তরভেদে কার্প জাতীয় মাছের সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন। দ্বিতীয় গবেষণাতে কার্প জাতীয় মাছের মজুদ ঘনত্ব নির্ধারণ করেছেন। তৃতীয় গবেষণাতে কার্প জাতীয় মাছের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত সম্পূরক খাদ্য নির্ধারণে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া পানির গুণাগুণ পরীক্ষা, পাংটনের প্রাচুর্যতা, মাছে ও পানিতে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি, মাছ ও পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি নিয়ে গবেষকরা কাজ করছেন।

কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তির পাশাপাশি উপ-প্রকল্প এলাকায় গ্রামীণ নারীদেরকে সম্পৃক্ত করে ছোট আকারের জলাশয়ে শিং, মাগুর, গুলশা মাছ নিয়েও গবেষকগণ গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে সুফলভোগীদের মধ্যে মাছ চাষের সব উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি মৎস্যচাষিরা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন এবং রাজশাহী অঞ্চলে কার্প ফ্যাটেনিং কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

এ ব্যাপারে উপ-প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তির প্রধান বাধা স্থানীয়ভাবে বড় আকারের কার্প জাতীয় মাছের অপ্রতুলতা-স্থানীয় নার্সারিগুলোতে বড় আকারের পোনা উৎপাদনসহ মৎস্যচাষিরা চাপের পোনা কিছু সময় লালন করে মজুদ পুকুরে মজুদ করলে দক্ষিণাঞ্চলে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বহুলাংশে বাড়বে।

0 comments on “প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্প জাতীয় মাছ চাষে নতুন সম্ভাবনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ