Friday, 08 August, 2025

পশুখাদ্য হিসেবে গমগাছ বিক্রি, উৎপাদন নিয়ে আশংকা


গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। এ সুযোগে অনেক কৃষক খেত থেকে গমের চারা কেটে ফেলছেন। তারা পশুখাদ্য হিসেবে গমগাছ বিক্রি করছেন বাজারে। কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, এবার জেলায় গমের আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে। এ অবস্থায় পশুখাদ্য হিসেবে গমগাছ বিক্রি বিক্রি করলে গমের উৎপাদন আরও কমে যাবে বলে আশংকা করছেন তারা।

গতকাল বুধবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ও নেকমরদ এলাকায় দেখা যায়, গমখেত এখন গমের শিষ বের হওয়ার হবার অবস্থায় আছে।

কিন্তু মুঠি মুঠি বাড়ন্ত গমের গোছা কৃষক কাস্তের টানে টানে কেটে চলেছেন।

আরো পড়ুন
ভেনামী চিংড়ি চাষে রোগের কারন, লক্ষন, প্রতিকার এবং চিকিৎসা

ভেনামী চিংড়ি (Vannamei shrimp, Litopenaeus vannamei) চাষ বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে রোগবালাই এই চাষে অন্যতম Read more

বিদেশি আনারসের পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য, নতুন দিগন্তের হাতছানি

দেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে ফিলিপাইনের বিখ্যাত 'এমডি-২' জাতের আনারসের। কৃষি বিভাগ মনে করছে, এই Read more

নেকমরদ এলাকার রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হালচাষ, বীজ রোপণ থেকে এ পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় আট হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ গম পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

সেই গম বিক্রি করে ১০–১১ হাজার টাকা হাতে আসতে পারে বলে জানান তিনি।

কিন্তু এখন বাজারে গবাদিপশুর খাবারের প্রচুর পরিমাণে সংকট রয়েছে।

এ সময় পশুখাদ্য হিসেবে এই চারা বিক্রি করে প্রতি বিঘা জমি থেকে ১৭–১৮ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

গম চাষিরা আরও জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গম চাষে হালচাষ, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ খরচ, শ্রমিক মজুরি সব মিলে আট হাজার টাকা খরচ হয়।

অন্যদিকে কাঁচা গম বিক্রি করাতে লাভ হচ্ছে ছয়–সাত হাজার টাকা।

গতকাল বালিয়াডাঙ্গী বাজারে নছিমনবোঝাই কাঁচা গমগাছ বিক্রি করতে আসেন বিভিন্ন কৃষক।

কুশলডাঙ্গী গ্রামের নওশাদ আলী জানান, দুই বিঘা জমির কাচা গম তিনি কিনে নিয়েছেন।

কমপক্ষে তিন হাজার আঁটি গমগাছ পাওয়া যাবে দুই বিঘা জমিতে।

বাজারে এখন ১০ টাকা দরে প্রতি আঁটি গমগাছ বিক্রি হচ্ছে।

এভাবে বিক্রি করলে প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে।

গোয়ালগাড়ি গ্রামের রাইসূল আলম জানান, বাড়িতে তিনি ছয়টি ছাগল পালন করেন।

আগে সেগুলো এলাকায় নিজেরা চড়ে খেলেও এখন সব খেতেই ফসল রয়েছে।

তাই ছাগলের খাবারের জন্য গমগাছ কিনতে এসেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে জেলায় ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়।

চলতি মৌসুমে ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে।

অধিদপ্তরের ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু হোসেন।

তিনি বলেন, জেলায় প্রতিবছরই গমের চাষ কমে যাচ্ছে।

চলতি মৌসুমে এমনিতেই অনেক কম জমিতে গমের আবাদ হয়েছে।

এখন যদি চারা কেটে বিক্রি করা হয় তাহলে গমের উৎপাদন আরও অনেক কমে যাবে।

0 comments on “পশুখাদ্য হিসেবে গমগাছ বিক্রি, উৎপাদন নিয়ে আশংকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ