Sunday, 16 November, 2025

পতিত জমিতে আনারসের বাগান গড়ছেন চাষিরা


ভূমি থেকে একটু উচু টিলা আকৃতির জমিগুলো কয়েক বছর আগেও পতিত ছিল। আগাছা, ঝোপঝাড়ে আবৃত ছিল এই জমিগুলো। অকেজো এই জমিগুলোতে তেমন কোনো ফসল ফলানো সম্ভব হত না। তবে গত কয়েক বছরে এ চিত্র পাল্টে গেছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে। এসকল পতিত জমিতে আনারসের বাগান গড়ে উঠেছে এখন। অনেকটা পরিকল্পিতভাবে করা আগাম জাতের এসব আনারস স্বাদেও অনন্য। আর তাই আনারস চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা।

অবশ্য জেলার কাপাসিয়া উপজেলার প্রায় সব অঞ্চলেই কিছু কিছু আনারস চাষ হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন
ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানি: সংকটের পর আশা!

টানা দুই বছর নিম্নমুখী থাকার পর অবশেষে দেশের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। একসময় প্রায় খাদের কিনারায় Read more

পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতা: সপ্তাহেই দাম বাড়লো ২০-২৫ টাকা
পেঁয়াজের দামে হঠাৎ মৌসুম শেষের অস্থিরতা

চলতি বছর দেশীয় পেঁয়াজ প্রায় পুরোটা সময়ই বাজারের চাহিদা মিটিয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও পেঁয়াজ মৌসুমের শেষ সময়ে এসে বাজারে Read more

কিন্তু কয়েক বছর ধরেই উপজেলার কিছু কিছু ইউনিয়নে এর চাষ ব্যাপকতা পেয়েছে।

বিশেষ করে রায়েদ, টোক ও বারিষাব ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে আনারস চাষ ব্যাপকতা পেয়েছে।

এসব জমিতে চাষ হয় স্থানীয়, জলঢুপ ও ক্যালেন্ডার জাতের আনারস।

কৃষকদের দেয়া তথ্য অনুসারে, ধান ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে আনারস চাষ অনেক লাভজনক।

এই ফলের পাশাপাশি চারাও পাওয়া যাচ্ছে।

সেখান থেকে বাড়তি আয়েরও সুযোগ আছে।

কাপাসিয়ার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকরা জানান অনেক চাষি নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন।

উপজেলার টোক ইউনিয়নে এ বছর নতুন করে অন্তত ১০০ জন কৃষক আনারস চাষে যুক্ত হয়েছেন।

অপরদিকে রায়েদ ইউনিয়নে বেশ কয়েকজন কৃষক আখের পাশাপাশি আনারসের চাষ করছেন।

এদিকে বারিষাব ইউনিয়নে পতিত পড়ে থাকা প্রচুর জমি।

সেসবের প্রায় সব গুলোই আনারস চাষের আওতায় এসেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উঁচু যেকোনো জমিতে আনারসের ফলন ভালো হয়।

জেলার কাপাসিয়ার কিছু এলাকায় প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবারের টিলার মতো জায়গা আছে।

এদের প্রায় সবগুলোই ফেলনা পড়ে আছে।

বর্তমানে এসব জমি আনারস চাষের আওতায় আসছে।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় আনারস চাষে রোগবালাই খুব কম।

আনারসের বিভিন্ন জাতের মধ্যে জলঢুপ জাতটি তুলনামূলক বেশ আগেই পাকা শুরু করে।

যার ফলে বাজারে এর দামও অনেক ভালো পাওয়া যায়।

তা ছাড়া কাপাসিয়ায় উৎপাদিত আনারস অন্যান্য এলাকার আনারসের চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু।

টোক ইউনিয়নের একজন কৃষক জানান, এ বছর প্রায় তিন বিঘা জমিতে আনারসের চাষ করেছেন।

তার জমিতে তিনি ক্যালেন্ডার ও জলঢুপ জাতের আনারস চাষ করেছেন।

কারণ হিসেবে বলেন জমিটি ধান চাষের উপযোগী নয়।

তাই দুই বছর আগে সেখানে আনারস চাষ শুরু করেন।

এ বছর ৫০ হাজার টাকার আনারস বিক্রি হয়েছে বলে জানান এ কৃষক।

আনারসের পাশাপাশি প্রচুর টাকার চারাও বিক্রি করেছেন।

প্রতিটি চারা অন্তত ৮–১০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

বারিষাব ইউনিয়নের অপর কৃষক জানান পাঁচ বিঘা জমিতে জলঢুপ জাতের আনারস চাষ করেছেন।

আশপাশের কৃষক ও স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শেই জমিতে আনারসের আবাদ শুরু করেন।

এ বছর এক লাখ টাকার আনারস বিক্রি করেছেন বলে তিনি জানান।

0 comments on “পতিত জমিতে আনারসের বাগান গড়ছেন চাষিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ