কলাগাছ থেকে কলা কেটে নেওয়ার পর গাছের কাণ্ড আর ফেলনা থাকবে না। বরং তাকে প্রক্রিয়াজাত করে উন্নতমানের গোখাদ্য বানানো যাবে। কলা্গাছ থেকে গোখাদ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম আহসান কবীর ও তার স্ত্রী জুবাইদা গুলশান এটি উদ্ভাবন করেন। কলাগাছ থেকে গোখাদ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খাদ্য হিসেবে কলাগাছের সাইলেজ, হেলেজ এবং মিশ্র খাদ্য তৈরি করেছেন তারা।
প্রাণিসম্পদ মেলায় তার উদ্ভাবন প্রদর্শন করেন
‘প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী-২০২২’ এ তিনি তার এ উদ্ভাবন প্রদর্শন করেন।
জামালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) সহযোগিতায় এ মেলা আয়োজিত হয়।
মেলায় গোখাদ্য তৈরির কৌশল প্রদর্শন করেন অধ্যাপক ড. এ কে এম আহসান কবীর।
জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফ্ফর হোসেন দিনব্যাপী এই প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আক্তার।
এতে জামালপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
কলা্গাছ থেকে গোখাদ্য প্রযুক্তি গবেষক অধ্যাপক ড. এ কে এম আহসান কবীর এর সাথে কথা হয়।
তিনি বলেন, প্রথমে কলাগাছের কাণ্ড মেশিনের সাহায্যে কেটে ছোট ছোট টুকরা করা হয়।
এতে এর আর্দ্রতা শতকরা ৬৫ থেকে ৭০ ভাগে চলে আসে।
তারপর একটি বায়ুরোধী ড্রাম বা ব্যাগে বিভিন্ন খাদ্য উপাদান এর সাথে মিশিয়ে বায়ুশূন্য অবস্থায় ৭ থেকে ১৪ দিন গাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
গাজনকৃত যে খাদ্য পাওয়া যায় তাই কলাগাছের সাইলেজ।
আবার কলাগাছের এই সাইলেজকে রোদে শুকিয়ে প্রাপ্ত খাদ্যকে কলাগাছের হেলেজ বলে। এর আর্দ্রতা শতকরা ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ হয়।
কলাগাছের হেলেজ ও অন্যান্য দানাদার খাদ্যের মিশ্রণে কলাগাছের মিশ্র খাদ্যটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
এতে প্রস্তুতকৃত গোখাদ্যগুলো খুব সুস্বাদু এবং পুষ্টি গুণসম্পন্ন।
তিনি জানান, বর্ষজীবী এই উদ্ভিদটি বছরে একবার ফলনের পর গাছ মারা যায়।
সাধারণত এর কান্ড পরিবেশে বর্জ্য হিসেবে থেকে যায়।
এই বিপুল পরিমাণ কলা গাছের বর্জ্য পরিবেশ দূষণের কারণ হিসেবে উল্লেখিত হয়।
তাই পরিবেশ দূষণরোধ ও গোখাদ্যের বিকল্প হিসেবে কলাগাছ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তিনি তার গবেষণাটি শুরু করেন বলে জানান।