Thursday, 04 September, 2025

আনারসে রাসায়নিক প্রয়োগের অভিযোগ মধুপুরের কৃষকদের বিরুদ্ধে


টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার আনারস সারাদেশ খ্যাত। কিন্তু সেখানকার চাষিরা আনারস আকারে বড় ও এর রং আকর্ষণীয় করতে রাসায়নিক ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকার বাইরে থেকে বিনিয়োগকারীরা এসে জমি বর্গা নিয়ে আনারস চাষ করছেন বলে জানা্চ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। রাসায়নিক প্রয়োগের প্রবণতা তাঁদের মধ্যে বেশি। আনারসে রাসায়নিক প্রয়োগের অভিযোগ আছে বহু কৃষকের বিরুদ্ধে। আনারসে মানুষের নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করায়।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মধুপুরে ৫ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে এ মৌসুমে আনারস চাষ হয়েছে।  ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টরে গত বছর আনারস চাষ করা হয়েছিল।

আনারস চাষের শুরু করেছেন গারোরা

আরো পড়ুন
ভেনামী (Vannamei Shrimp) চিংড়ি চাষে পোষ্ট লার্ভা PL15 সাইজ নির্ধারণের গুরুত্ব

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভ্যানামি / ভেনামি (Litopenaeus vannamei) চিংড়ি চাষের প্রতি আগ্রহ Read more

ক্ষুরা রোগ নিয়ন্ত্রণে করণীয়: খামারি ও কৃষকের জন্য জরুরি নির্দেশিকা

ক্ষুরা রোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (FMD) একটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ, যা গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও শুকরের Read more

স্থানীয় সূত্র বলছে, মধুপুর বনাঞ্চলে আনারস চাষ শুরু করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের লোকজন। গারো সম্প্রদায়ের অজয় এ মৃ জানান যে, এ অঞ্চলে তাঁদের সম্প্রদায়ের লোকজন পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে আনারস চাষ শুরু করেন যা কয়েক বছরের মধ্যে সারা দেশে সুনাম কুড়িয়ে নেয়।

গত দুই দশকে এ এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে যোগাযোগব্যবস্থার, বাজারজাতকরণ হয়েছে অনেক সহজ। এখন বাইরে থেকেও বিনিয়োগকারীরা েআসছেন। তারা জমি বর্গা নিয়ে আনারস চাষ করছেন, যাদের মধ্যে রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতা বেশি।

সূত্রগুলো জানায়, রোপণের পর থেকে দ্রুত ফল আসা, বড় করা, দ্রুত পাকানো ও রং আকর্ষণীয় করতে রাসায়নিক কয়েক ধাপে প্রয়োগ করা হয়। অল্পদিন পরেই ফল ধরার জন্য আনারসে ইথোফেন গ্রুপের রাইপেন, ইথিপ্লাসসহ বিভিন্ন রাসায়নিক দেওয়া হয়।  ফল আসার পর তা বড় করার জন্য প্লানোফিক্স, সুপারফিক্স, পাকানোর জন্য এবং রং আকর্ষণীয় করতে রাইপেন, ইথিপ্লাস নামক রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়।

মধুপুর উপজেলা সদরের অধিবাসী হীরা তালুকদার। তিনি গড় এলাকায় আনারস চাষ করেন জমি বর্গা নিয়ে। তার ভাষ্য, বড় এবং ভালো রঙের আনারস ক্রেতারা বেশি কেনেন বিধায় বাধ্য হয়ে রাসায়নিক ব্যবহার করেন, যাতে মুনাফা বেশি হয়। এসব রাসায়নিক সরবরাহ করছে বিভিন্ন সার ও কীটনাশক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।  গায়ে পাকানোর জন্য ব্যবহারের নিয়ম লেখা না থাকলেও কৃষকেরা পাকানোর জন্য এগুলো ব্যবহার করেন। প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২ থেকে ৩ মিলিলিটারের স্থলে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিলিটার পর্যন্ত রাসায়নিক মিশিয়ে আনারসে ছিটান বলে অনেক কৃষক জানিয়েছেন।

খোজ নিয়ে জানা যায় মধুপুর জেলায় শতাধিক দোকানে এসকল রাসায়নিক কিনতে পাওয়া যায়। উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে যে, এসকল রাসায়নিকের প্রভাবে বিভিন্ন প্রকার রোগ আক্রান্ত হতে পারে মানুষ।

0 comments on “আনারসে রাসায়নিক প্রয়োগের অভিযোগ মধুপুরের কৃষকদের বিরুদ্ধে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ