ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এই সকল লক্ষ্য সামনে রেখে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ৫০ লাখ টন ধান কেনার সুপারিশ করা হয়েছে। সম্প্রতি খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন এই সুপারিশ করেন।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।
এই ওয়েবিনার এর সভাপতিত্ব করেন তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী সঞ্চালনা করেন।
বক্তারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে দেশে চাল উৎপাদনের পরিমাণ তিনগুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে সাড়ে তিন কোটি টন ছাড়িয়ে গেছে চালের উৎপাদন।
চাল উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা এসেছে। এখনো অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ ১৬ কোটির বেশি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
চাল-গমসহ খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও জনসংখ্যার তুলনায় খাদ্য চাহিদা কতটুকু তা নির্ধারণ করা নেই।
তাল মিলিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও সুবিন্যস্ত নয়।
খাদ্য উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবস্থাপনাতে ত্রুটি রয়েছে যা দূর করা অত্যন্ত জরুরি।
তাই কৃষক ও ভোক্তা স্বার্থ রক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
একইসাথে প্রণয়ন করতে হবে খাদ্য অধিকার আইন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের কোন অভাব নেই।
তবে অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ তথ্য না থাকায় বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়।
মন্ত্রণালয়ও এর দায় এড়াতে পারে না।
কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষিজমির বাণিজ্যিক ব্যবহার বা শ্রেণি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্মানীয় অতিথি ছিলেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
তিনি জানান, দেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে।
সে কারণে আমদানিও কম করতে হচ্ছে।
চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করতে হয় এ বছর।
২০১০ সাল থেকে আমরা খাদ্যে অর্থাৎ চালে উদ্বৃত্ত উৎপাদন করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বাজারে অদৃশ্য হাতের কারণে মাঝে মাঝে দাম বৃদ্ধি পায়।
এতে বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের দেশীয় অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিতে সাফল্য এসেছে।
এর কারণ হিসেবে সরকার কৃষি-গবেষণার ক্ষেত্রটিতে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, বাজারে খাদ্যশস্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
দেশের বড় ৫০টি অটো রাইস মিলে বেশিরভাগ চালের মজুত থাকে।
তারা চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
তাই এ মজুত আইনের সংশোধনের বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
তিনি বলেন, দেশের মোট কৃষিজ জমির ৭৪ দশমিক ৮৫ শতাংশে ধান উৎপাদিত হয়।
সরকার সক্ষমতা রাখে মোট ধান উৎপাদনের মাত্র ছয় শতাংশ মজুতের।
গত কয়েক বছরে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানিও বেড়েছে।
আমদানি নির্ভরতা ১৫ শতাংশে গত দশ বছরে পৌঁছেছে।
প্রবন্ধে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে একটি হলো কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ৫০ লাখ টন ধান কেনা।