হবিগঞ্জ জেলায় হঠাৎ করেই জেলার লাখাই, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় আবাদকৃত বোরো জমিতে রোপণ করা ব্রি-২৮ জাতের ধানে দেখা দিয়েছে চিটা। ধানের ফলন নিয়ে কৃষকের হতাশা।
ফলন কম হওয়ার কারনে কৃষকদের চোখে মুখে এখন বিরাজ হতাশার চাপ। যদিও হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ব্রি-২৮ জাতের ধানে কিছুটা চিটা দেখা দিলেও অন্যান্য ফসল ভালো রয়েছে। আর জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলেই ব্রি-২৮ জাতের ধানে এমনটা হচ্ছে।
আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে জেলার বানিয়াচং, লাখাই ও আজমিরীগঞ্জসহ ভাটি অঞ্চলের নিম্ন এলাকাগুলোতে রোপণ করা হয় ব্রি-২৮ জাতের ধান।
আর মাত্র ক’দিন পরই যখন কৃষকেরা এ ধান গোলায় তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তার আগ মুহূর্তে ধানের ফুল বের হওয়ার সাথে সাথেই মরে যাচ্ছে চারাগুলো।
এমতাবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। এরমধ্যে বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর, বিথঙ্গল, বিজয়পুর, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা, বিরাট, কাকাইলছেও, আনন্দপুর ও লাখাই উপজেলার স্বজনগ্রামের হাওর, রুহিতনসী হাওর, শিবপুর হাওর, রাজনগর হাওর, আঠারোকাইল্লা হাওর, ও ভোগার হাওরসহ বেশ কিছু হাওরের চিত্র একেবারেই করুণ।
দেখা যায় ব্রি-২৮ জাতের ধানের যে চারাগুলো মাত্র সপ্তাহখানেক পূর্বেও সতেজ ও সবুজ ছিল সেই চারাগুলো ধানের ফুল বের (তোর) হওয়ার সাথে সাথেই মরে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ব্রি-২৮ জাতের ধানের প্রতিটি জমিতেই একই অবস্থা।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি আমরা জানার পরপরই নাগুড়া ফার্মের ধান গবেষকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাওর অঞ্চল পরিদর্শন করি। মূলত জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলেই ব্রি-২৮ জাতের ধানে এমনটা হচ্ছে। তিনি বলেন, দিনের বেলায় অতিরিক্ত গরম ও রাতের বেলায় ঠাণ্ডা থাকার কারণে ব্রি-২৮ জাতের ধান এখন চাষের অনুপযোগী। তাই নতুন গবেষণায় ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৬, ব্রি-৯৬ আবাদ করলে এমন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। তবে ব্রি-২৮ জাতের ধান জেলা কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেই হিসেব নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে।
একই সাথে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে দিনে অতিরিক্ত গরম ও রাতে ঠাণ্ডা থাকায় এ জাতীয় ধান এখন চাষাবাদের অনুপোযোগীও বলছেন তারা। তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারনে ধানে চিটা দেখা দিয়েছে বলছেন বিশেষজ্ঞরা ।