Saturday, 23 August, 2025

সম্ভাবনা স্বত্ত্বেও উপেক্ষিত হয় মশলা বা সুগন্ধি ফসলের চাষ


‘মসলার দেশ’ বা সুগন্ধি গাছের দেশ হিসেবে একসময় ভারতবর্ষের পরিচিতি ছিল ।  উপমহাদেশ থেকে সুগন্ধি মসলা ও গাছপালা যেত বাইরের দেশে প্রচুর পরিমাণে । এসব গাছের ব্যবহার ও বাণিজ্যের উল্লেখ বিভিন্ন সাহিত্যে পাওয়া যায়। ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়াও   সুগন্ধি গাছপালার প্রাচুর্য এশিয়া মহাদেশজুড়ে সর্বত্রই ছিল ।

চীনা সম্রাট শেন নাং চীনে নিয়মিত সুগন্ধি গাছের বাজার বসাতেন। সুস্বাস্খ্যের আশায় তিনি প্রতিদিন প্রচুর সুগন্ধি মসলা খেতেন । চীন, লাওস, কম্বোডিয়া, ভারত,থাইল্যাণ্ড, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশে নানা রকমের সুগন্ধি গাছ পাওয়া যেত ।

প্রথমে বন জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা হলেও  ধীরে ধীরে চাহিদা বৃদ্ধি ও বাণিজ্যিক কারণে সুগন্ধি গাছের চাষ শুরু হয়। সে চাষাবাদ অব্যাহত আছে আজও । কিন্তু সম্ভাবনা স্বত্ত্বেও উপেক্ষিত হয় কৃষির এ অংশটি। বাণিজ্যিকভাবে নানা রকম সুগন্ধি গাছ আবাদ করে  বেশি লাভবান হচ্ছেন অনেকে।

আরো পড়ুন
কুমড়ার ফলন বাড়ানোর কার্যকর উপায়

বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহুরে কৃষিতে কুমড়া একটি বহুল চাষকৃত ও জনপ্রিয় সবজি। সারা বছর চাষযোগ্য এই ফসলের পুষ্টিগুণ ও বাজারমূল্য Read more

বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা

দেশের বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ চিহ্নিত করে সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বিভিন্ন Read more

সুগন্ধি গাছ বলতে সেসকল গাছ বুঝায় যে গুলোতে সুগন্ধি যুক্ত। যেমন পুদিনা থেকে সুগন্ধি ভেসে আসে। এরূপ এলাচ বা দারুচিনি থেকে একধরনের সুগন্ধি ভেসে আসে। এ ধরনের গাছে একধরনের গ্রন্থি থাকে যা বিভিন্ন প্রকার সুগন্ধি তেলে ভরপুর। েএই সকল তেলই গাছের সুগন্ধির কারণ। খাদ্যকে  সুস্বাদু ও সুগন্ধিযুক্ত করতে বা প্রসাধনসামগ্রী, ওষুধ, বালাইনাশক ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার হয়।

প্রায় ৬০টি পরিবারের কয়েক শত সুগন্ধি গাছের খোজ মিলেছে পুরো পৃথিবীতে। এদের বেশির ভাগ সরাসরি খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সুগন্ধির সাথে সাথে এরা খাবারকে সুস্বাদু করে। পাশাপাশি খাদ্যের সংরক্ষণকাল বাড়ায়।

মসলা উপমহাদেশের রন্ধন শিল্পের অন্যতম উপকরন

সাধারণভাবে রসুন, আদা, মরিচ, পিঁয়াজ,  হলুদ,  মৌরি, জৈন, ধনিয়া, বিলাতি ধনিয়া,  কালোজিরা, আম আদা, মেথি, পুদিনা, সুগন্ধি চাল, দারচিনি, গোলমরিচ, তেজপাতা  ইত্যাদি সুগন্ধি গাছ চাষকরা হয়। এছাড়া কিছু সুগন্ধিগাছ আছে বনজঙ্গলে পাওয়া যায়।  বিদেশ থেকে িআমদানি করা হয় এলাচ, জিরা, লবঙ্গ ইত্যাদি। তবে নাম না জানা আরও অনেক সুগন্ধি গাছ আমাদের দেশেই বনবাদাড়ে বিদ্যমান।  কিছু গাছ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় তো কিছু গাছ সরাসরি বিভিন্ন বস্তুকে সুগন্ধি করতে ব্যবহৃত হয়।

ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে সুগন্ধি শিল্পের খুব প্রসার ঘটেছে। ইতিহাস বলে মিশরীয় ও ব্যবলনীয়রা কমলা ফুল থেকে প্রাকৃতিক পারফিউম তৈরি করে ব্যবহার করতেন পাতন প্রক্রিয়ায়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এখন বাণিজ্যিকভাবে বেলি ফুল থেকে সুগন্ধি তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশে রসুন, আদা,পিঁয়াজ, ধনিয়া প্রভৃতি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলেও তা দেশের চাহিদা মিটানোর জন্য যথেষ্ট হয়ে ্ওঠে না। বিদেশ থেকে প্রতিবছর যেসব আমদানী করা হয় তাদের মান ও দর্শনমূল্য খুব বেশি। দেশীয় পণ্যগুলোর ফলন কম হওয়ায় চাষীরা সেদিকে আগ্রহী হন না। একারণে বিশ্ব বাজারের সাথে সুগন্ধি গাছ উৎপাদনে পেরে উঠা হয়ত সম্ভব না। দেশীয় বাজারে সুগন্ধি ফসল থাকলেও তা হয় আবাদ হয় না। কিংবা আবাদ হলেও তাতে পরিকল্পনা, লক্ষ্যমাত্রা কিছুই থাকেনা। তাই এসকল ফসলের চাষের প্রতি জোর প্রদান করা খুবই প্রয়োজন।

0 comments on “সম্ভাবনা স্বত্ত্বেও উপেক্ষিত হয় মশলা বা সুগন্ধি ফসলের চাষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ