কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমার ও গঙ্গাধরসহ ১৬ টি নদ-নদীর অবস্থান। এ সকল নদীর বুক জুড়ে এখন শুধুই বিস্তৃত বালুচর। এসব বালুচরে সাধারণত তেমন কোনো ফসল ফলে না। তবে সে সকল এখন অতীত। এসব বালুচরের ভূমিহীন কৃষকরা অব্যবহৃত বালুচরকে ব্যবহার উপযোগী করে তুলেছেন। বালির বুকে ফসল ফলাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ও কৃষকরা। বালির বুকে ফসল হিসেবে বিপুল পরিমাণ কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা।
কৃষিবিভাগ ও বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা কৃষকদের সহায়তা করছে
কৃষিবিভাগ সহ বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা বালুচরে কুমড়া চাষ করতে ভূমিহীন কৃষকদের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় ও বীজ দিয়ে সহায়তা করছে।
তবে তা স্বত্ত্বেও এখানে অধিকাংশ কৃষক নিজ উদ্যোগে কুমড়া চাষ করে সফল হয়েছেন।
কুড়িগ্রামের কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতর থেকেই এ তথ্য পাওয়া যায়।
তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করা হয়েছে যেখানে ব্যবহৃত জমির বেশিরভাগই বালুচর।
নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদীর চরের কৃষক সাফিয়ার রহমান।
তিনি জানান, গত ৩ বছর নিজ উদ্যোগে বালুচরে কুমড়া চাষ করেছেন তিনি।
এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তিনি প্রতি বছর কুমড়া বিক্রি করে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করছেন।
এ কুমড়া চাষি জানান যে, নিজে পরিশ্রম করে বালুচরে কুমড়া চাষ করেছেন।
সঠিকভাবে যত্ন নিলে বালুচরে খুবই ভালো কুমড়া চাষ করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে অষ্টমীর চর এলাকার ভূমিহীন কৃষক শেখের আলী।
তিনি বলেন, বালুচরে কুমড়া চাষ করে ভালোই লাভবান হয়েছেন তিনি।
একই চরের বসবাসকারী অনেক কৃষক এখন কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
বালুচরে কুমড়ার চাষে ফলন ভালোই পাওয়া যায়, তবে তার জন্য যত্ন করতে হয় খুব।
একই চরের বাসিন্দা ছমিরন বেওয়া।
তিনি জানান, গত বছর দুই বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করেছিলেন।
এতে তিনি ভালোই লাভবান হয়েছিলেন তাই এবার ৩ বিঘা জমিতে আবারও কুমড়া লাগিয়েছেন তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মঞ্জুরুল হক।
এ কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চরের কৃষকরা কুমড়া চারা লাগান।
মার্চ মাস থেকেই তারা কুমড়ার ফলন পেতে শুরু করেন।
দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এসে এসব চরের উৎপাদিত কুমড়া কিনে নিয়ে যান।