আদিকাল থেকে কৃষকের ক্ষেতের ফসল রক্ষায় কৃষকেরা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছেন। যার মধ্যে অন্যতম হলো কাকতাড়ুয়া। ফসল রক্ষায় কাকতাড়ুয়ার ভূমিকা অনেক বেশি। মানুষের আকৃতি দিয়ে মাঠের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা পুতুলকেই কাকতাড়ুয়া বলা হয়। এতে বিভিন্ন পাখির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পায়। যার ফলে ফসল উৎপাদনে লাভবান হন কৃষক। এটি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি। এতে পাখিও মারা যায় না, আবার পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা পায়।
কৃষকেরা জানান, ফসল বাঁচাতে পশু-পাখি ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর জন্য কাকতাড়ুয়া ব্যবহার করা হয়।
বাঁশ, খড়, পুরাতন জামা আর মাটির হাঁড়িতে কালি দিয়ে মুখের আদল বানিয়ে কাকতাড়ুয়া বানানো হয়।
সেটি ক্ষেতের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
দেখতে অনেকটা মানুষের মত হয় কাকতাড়ুয়া।
বাতাসে দোল খায় বলে কাক, শালিক, চড়ুই, ঘুঘুসহ অন্যান্য পাখি মানুষ ভেবে ভয় পায়।
সরেজমিনে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন ফসলি মাঠ ঘুরে অনেক ক্ষেতে কাকতাড়ুয়া দেখা যায়।
দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোনো মানুষ দাড়িয়ে যেন ফসল পাহারা দিচ্ছে।
খুব ভালোভাবে খেয়াল না করলে চেনা যাবে না।
পাখির মতো ভয় পেয়ে যাবে যে কোন মানুষ।
মানিকগঞ্জ সদরের দিয়ারা ভবানীপুর গ্রামের কৃষক উজ্জল হোসেন।
তিনি বলেন, বীজ বোনার আগে ক্ষেতে হালচাষের পর মাটিতে পোকা-মাকড় বের হয়।
এসব পোকা-মাকড় খেতে বিভিন্ন ধরনের পাখি খেতে আসে।
বীজ বপন বা চারা লাগানোর পর পরেই পাখিদের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়।
তখন ক্ষেতে সকাল-বিকেল পাহারা দিতে হয়।
তারপরেও পাখিদের ফেরানো যায় না। তাই ক্ষেতে কাকতাড়ুয়া দিতে হয় যেন তারা ক্ষেত নষ্ট না করে।
শিবালয়ের তারাইল গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক মিয়া।
তিনি বলেন, কৃষকরা সাধারণত ক্ষেত-খামারে ফসল ফলিয়ে খায়। বিঘা-বিঘা জমিতে চাষ করতে হয় বিধায় সব সময় পাখি তাড়ানো যায় না।
তাই বাঁশ, খেড়, পুরাতন কাপড় আর মাটির হাঁড়ি দিয়া তৈরি কাকতাড়ুয়া দেয়া হয়।
মানিকগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক আবু মো.এনায়েত উল্লাহ।
তিনি বলেন, পাখি তাড়ানোর জন্য আদিকাল থেকে ক্ষেতে কাকতাড়ুয়ার ব্যবহার হয়ে আসছে।
এতে মাঠের ফসল রক্ষা পায়, অন্যদিকে পাখি হত্যা বন্ধ হচ্ছে।