ফেলন আমাদের দেশে ডাল জাতীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম। দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে এটি খুব জনপ্রিয়। এ জাতীয় ডাল পর্যাপ্ত সূর্যের আলোযুক্ত পতিত জমিতে ভালো হয়। পতিত জমিতে ফেলনের চাষ হতে পারে খুব লাভজনক। সেচ ছাড়াই চাষ করা যায় এ ডাল। তাছাড়া বাজারে এটির চাহিদাও রয়েছে বেশ।
মাটির ধরনঃ
বেলে দো-আঁশ থেকে এঁটেল দো-আঁশ মাটি ফেলন চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত।
জমি হতে হবে উঁচু ও মাঝারি উঁচু এবং উত্তম পানি নিষ্কাশনযুক্ত।
ফেলন খুব সংবেদনশীল, পানি জমলে গাছ মারা যায়।
এই ফসল জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না।
কিভাবে চাষ করবেনঃ
প্রথমে জমি চাষ দিয়ে উপযুক্ত করে দেন।
৩ থেকে ৪ বার মই দিয়ে জমির মাটি ঝুরঝুরা করে নিতে হবে।
খুব বেশি ঝুরঝুরা না হলেও তেমন সমস্যা নেই।
মাটির মধ্যে বীজ সামান্য প্রবেশ করালেই গাছ গজিয়ে যায়।
ফেলনের চাষে মূলত বীজ জমিতে ছিটিয়ে বপন করা হয়।
তবে সারি করেও বপন করা যায়।
সেক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব হতে হবে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১০ সেন্টিমিটার রাখতে হবে।
সারিতেই বপন করতে হবে তেমন বাধ্যবাধকতা নেই।
সময় বাচাতে চাইলে ছিটিয়ে বীজ বপন করা ভালো।
অগ্রহায়ণ মাস ফেলন চাষের জন্য উত্তম।
অর্থাৎ মধ্য-নভেম্বর থেকে মধ্য-ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত।
এসময় এটি বপনের উপযুক্ত সময়।
প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০ থেকে ৫০ কেজি বীজ বপন করা যায়।
ফেলনের ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে।
প্রতি হেক্টর জমিতে ২০ থেকে ৩০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।
এর সাথে প্রতি হেক্টর জমিতে টিএসপি ৪০ থেকে ৪৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে।
সাথে এমপি সার ২০ থেকে ৩০ কেজি এবং অণুজীব সার ৪ থেকে ৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে।
সব সার শেষ চাষের সময় এক সঙ্গে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
পরিচর্যাঃ
জমিতে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে।
বপনের অন্তত ৩০ দিনের মধ্যে একবার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
ফেলনের জমিতে এমনিতে সেচের প্রয়োজন পড়ে না।
তবে ফলন আসার সময় হলে একটি সেচ দেয়া ভালো।
এতে ফেলনের ভালো ফলন হয়।
ফসল সংগ্রহঃ
ফসল সংগ্রহ করার জন্য মধ্য-চৈত্র থেকে চৈত্রের শেষ সপ্তাহ খুবই ভালো সময়।