Thursday, 14 August, 2025

ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা ঠাকুরগাঁওয়ে, দুশ্চিন্তায় কৃষক


ঠাকুরগাঁওয়ে খেতের আমন ধান বর্তমানে তিন পর্যায়ে রয়েছে। থোড় (শিষ গজানো), পুষ্পায়ন ও দানাবাঁধা—এই তিন পর্যায়ে। এই সময়ে মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা ও জমিতে পানির অভাব হলে ধানের ফুলে পরাগায়নে বাধা সৃষ্টি হবে। আর এতে ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে ।

আমন মৌসুমেই  সারা বছরের ৮০ ভাগ বৃষ্টি হয়ে থাকে। বৃষ্টিনির্ভর আমন চাষ তাতেই চলে। কিন্তু এবার বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই ঠাকুরগাঁওয়ে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে মাত্রাতিরিক্ত তাপের কারণে খেতের মাটি ফেটে গেছে।  ঘন ঘন সেচ দিয়েও কৃষক জমিতে পানি ধরে রাখতে পারছেন না। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবার সম্ভাবনার পাশাপাশি ফলনও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩১৫ হেক্টর।

আরো পড়ুন
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫: মৎস্যসম্পদ রক্ষায় নতুন প্রতিজ্ঞা

দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা, সম্প্রসারণ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে আবারও শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫। এবারের প্রতিপাদ্য, ‘অভয়াশ্রম Read more

কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার ফলন, রাজস্ব আয়ে নতুন রেকর্ড

মাছ ধরার জন্য দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হয়েছে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ। আর মাত্র সাত দিনেই এই হ্রদে Read more

কোন আবহাওয়া অধিদপ্তর নেই জেলায়

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কোনো কার্যালয় ঠাকুরগাঁওয়ে নেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হিসাব অনুসারে গত ৮ সেপ্টেম্বর জেলায় সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ২০ মিলিমিটার। গত কয়েক দিনে ৩২ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা ওঠা–নামা করেছে।

কৃষি কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, টানা বৃষ্টি না হওয়ায় কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এতে ধানের ফলন ভালো হওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকে। ধানের ফুলে পরাগায়ন ঘটার জন্য তাপমাত্রা থাকতে হয় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। কিন্তু জেলার তাপমাত্রা বেশি থাকায় ধানে চিটা হওয়ার শঙ্কা থাকছে। সম্পূরক সেচ দিয়ে এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

জেলার রোপণ করা আমন ধানের মোট আবাদের ১৩ শতাংশ কুশি পর্যায়ে রয়েছে।৪৬ শতাংশ থোড় (শিষ) আসার আবস্থায় এবং পুষ্পায়ন পর্যায়ে ২৮ শতাংশ রয়েছে। এছাড়া দানাবাঁধা আবস্থায় রয়েছে ১৩ শতাংশ।

ঠাকুরগাঁও সদর, রানীশংকৈল ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় তাপের দূরবস্থা।  শুকিয়ে ফেটে গেছে অনেক ধানের জমি। গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে কোথাও কোথাও খেতে সেচ দিচ্ছেন কৃষক।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক অবশ্য বলেন, এ সময়ে তাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জমিতে সব সময় পানি ধরে রাখা আবশ্যক। নতুবা চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জেলার সব এলাকাতেই এখন সেচসুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা সবসময় কাজে আছেন। তাদের পরামর্শে কৃষকেরা গভীর ও অগভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে জমি ভিজিয়ে রাখছেন।

তিনি আশা করেন এতে উৎপাদন খরচ কিছুটা বাড়লেও ধানের ফলনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।

0 comments on “ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা ঠাকুরগাঁওয়ে, দুশ্চিন্তায় কৃষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ