Tuesday, 11 March, 2025

সর্বাধিক পঠিত

কাকিলা মাছ পুকুরে চাষ করার পদ্ধতি


দেশীয় জাতের মাছ কাকিলা। সময়ের পরিক্রমায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এই মাছ সুস্বাদু, পুষ্টিকর। সেই কাকিলা মাছ  পুকুরে চাষ করার জন্য উপায় বের করেছেন গবেষকরা। যশোরের মৎস্যবিজ্ঞানীরা এই চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।

যশোরের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট তিন বছর গবেষণার পর মাছটির কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করেন। সব মিলিয়ে দেশীয় ৩১ টি প্রজাতির মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবিত হলো।

ওই গবেষণা সম্মিলিতভাবে পরিচালনা করেন বিএফআরআই ইনস্টিটিউটের স্বাদু পানি উপকেন্দ্র যশোরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কমকর্তা রবিউল আউয়াল হোসেন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কমকর্তা শরীফুল ইসলাম ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিশির কুমার দে ।

আরো পড়ুন
বছরে ২৩০টি ডিম দেয় নতুন জাতের ‘বাউ ডাক’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) উদ্ভাবিত নতুন জাতের হাঁস ‘বাউ-ডাক’ দেশের হাঁস খামার ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। যেখানে দেশি Read more

মৎস্য খাতে তরুণদের আগ্রহ আশাব্যঞ্জক: ফরিদা আখতার
fish conference

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তরুণদের মধ্যে মৎস্য খাতে কাজ করার প্রতি যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত Read more

কাকিলা মাছের পরিচিতি

কাকিলা নামক এই মাছ সুস্বাদু । কাঁটা কম এবং মানব দেহের জন্য উপকারী অনুপুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ।

একসময় অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে এ মাছটির প্রাচুর্য ছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে এদের বাসস্থান ও প্রজনন ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে  মাছটি এখন দুর্লভ হয়ে গেছে।

কাকিলার আরেক নাম কাখলে।  বিলুপ্তপ্রায় এই মাছ এর দেহ সরু, ঠোঁট লম্বাটে এবং ধারালো দাঁতযুক্ত। বাংলাদেশে প্রাপ্ত জাতটি  মিঠা পানির জাত।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার,শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ মাছ পাওয়া গেলেও রং ও আকারে কিছুটা পার্থক্য থাকে।

যেভাবে গবেষকরা কাজ করেছেন

গবেষকরা জানান প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমান জলাশয়ে প্রজনন করে থাকে। বিশেষ করে নদীতে এবং বর্ষাকালে প্লাবিত অঞ্চলে।পরিণত মাছ ভাসমান জলজ উদ্ভিদ বিহিন স্থানে বসবাস করে। জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচে ও ভাসমান শেকড়ে স্ত্রী মাছ ডিম পাড়ে।

গবেষকদর দাবি  কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজনন  বাংলাদেশেই প্রথম। বিশ্বের কোথাও এ মাছের কৃত্রিম প্রজননের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

গবেষকরা  জানান, রাজবাড়ী জেলাসংলগ্ন কুষ্টিয়ার পদ্মা নদী থেকে কাকিলা মা-বাবা মাছ সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে যশোরে এনে যশোরের স্বাদু পানি উপকেন্দ্রের পুকুরে ছাড়া হয়। পরে হ্যাচারিতে উৎপাদিত  মাছের জীবিত পোনা এবং নানা জলাশয় থেকে সংগৃহীত জীবিত ছোট মাছ খাইয়ে পুকুরের পরিবেশে মাছকে অভ্যস্ত করা হয়।

মা-বাবা মাছকে একটি চৌবাচ্চায় রেখে ঝর্ণাধারার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর সেখানে কচুরি পানা রাখা হয়। মা মাছ ডিম ছাড়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পরে।  যার প্রায় ৯০ থেকে ১০০ ঘণ্টার মধ্যে নিষিক্ত ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশের বিলুপ্তপ্রায় ৬৪টি মাছের মধ্যে ৩০টি মাছের কৃত্রিম প্রজননে  সফলতা লাভ করেছে। কাকিলা মাছ সফলতার ধারাবাহিকতায় ৩১তম মাছ হিসেবে যুক্ত হলো।’

0 comments on “কাকিলা মাছ পুকুরে চাষ করার পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ