এলাচ, দামি একটি মসলার নাম। এলাচ কে মসলার রানী বলা হয়। এলাচ চাষ কে লাভজনক ও মুনাফা যুক্ত করতে রয়েছে কিছু টিপস। যেহেতু এলাচ গাছ এদেশিয় না চারা উৎপাদনে কিছুটা বেগ পেতে হয়।
টিস্যুকালচার এর মাধ্যমে এলাচের চারা উৎপাদনের মাধ্যমে এলাচের চারা পর্যাপ্ত পাওয়া যায়। আজকে আমরা এলাচের চাষবাদ নিয়ে আলোচনা করব-
এলাচের জাতঃ
দুই ধরনের এলাচ হয়, বড় ও ছোট। এলাচের পঞ্চাশটি জাতের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে বহু আগে থেকে বেশ কয়েকটি প্রজাতির ফলন হচ্ছে। আমাদের প্যাটেন্ট চারটি জাত এবং প্যাটেন্ট ছাড়া দুটি জাত সহ মেট দশটি জাত আছে। তার মধ্যে দুটি জাত অবমুক্ত করা হয়েছে কৃষক পর্যায়ে চাষ করার জন্য।
সিলেট অঞ্চলে যে এলাচ জন্মে, তার নাম মোরঙ্গ এলাচ। আমাদের দেশে জঙ্গলে যে আদা গাছ জন্মায়, বড় এলাচ গাছ দেখতে অনেকটা সে রকম।
এলাচ চাষের স্থান কেমন হয় ?
ভেজা স্যাতস্যতে মাটিতে এলাচের চাষ ভাল হয়। যেহেতু আমাদের দেশে বৃষ্টি কম, সেহেতু বাংলাদেশের মাটিতে এলাচ গাছ তেমন বেড়ে ওঠে না। সাধারণত রোদ-ছায়াযুক্ত জায়গায় এলাচ গাছ ও ফলন ভালো হয়।
মাটি তৈরী ও এলাচের চারা রোপন
মাটির পিএইচ কত ? মাটিতে বলি বা স্যান্ড এর পরিমাণ কত? মাটিতে জৈব উপাদানের পরিমান কত এলাচ চাষের ক্ষেত্রে জানতে হবে।
প্রথম বছরে চারা কেনার খরচ করতে হয় এবং পরের বছর থেকে আর তেমন খরচ নেই। মাটিতে পিএইচ এর পরিমাণ ৬ এর বেশী হলে মটির সাথে চুন মিশাতে হবে পরিমাণ মত। জমিতে বালির পরিমাণ কম থাকলে অতিরিক্ত বালি মেশাতে হবে। যেখানে এটেল মাটি আছে সেখানে বালি মেশাতে হয়।
দোয়াস মাটি এলাচ উৎপাদনের জন্য ভাল কোন কিছু করতে হয় না। মাটিতে জৈব উপদানের পরিমাণ কম থাকলে পচা গোবর সার বা কেঁচো কম্পষ্ট সার অতিরিক্ত প্রয়োগ করতে হবে।
রাসায়নিক সার হিসাবে জমি তৈরীর সময় চাষের সঙ্গে প্রতি শতকে টিএসপি ৫০০ গ্রাম, প্রতি শতকে পটাশ ৫০০ গ্রাম।
এ ছাড়া কিটনাশক হিসাবে জেঞ্জার বা ফুরাডান বা কার্বফুরান দিতে হবে। যা দানাদার কিটনাশক নামে পরিচিত (৩৩ শতক জমিতে ২ কেজি পরিমাণ দিতে হবে। ১দিন পর সেচ দিয়ে জমি ভাল ভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। যাতে জমির সাথে সারগুলো ভালভাবে মিশে যেতে পারে।
চারা রোপনে করনীয়
সবক্ষেত্রে এলাচের ভাল ফলন পেতে হলে এর ২ সপ্তাহ পরে ২ ফিট চওড়া ও দেড়ফিট গভীর গর্ত করে গোবর সার বা জৈব সার প্রয়োগ করে সাথে দানাদার কিটনাশক অবশ্যই দিতে হবে প্রতি গর্তের গোবরের সাথে ২০০ গ্রাম।
রোপনের পর জমিতে সেচ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত পানি যেন গাছের গোড়ায় জমে না থাকে। এলাচের চারার গোড়ায় পানি জমলে গাছ মরে ও পচে যায়।
এলাচের পরিচর্যা:
রোপণের ৩য় বছরে শীতকালে ফলনের পর পুরাতন গাছ ছাঁটাই করতে হয়। অবাঞ্চিত মরা গাছ ছাঁটাই না করলে গাছে ভালো ফলন হয় না।
শীতকালে এলাচ গাছে ফুল ও ফল হয় না। তাই শীতকালে মরা গাছ ও দুর্বল গাছ ছাঁটাই করা জরুরি।
কোথায় এলাচ ফল জন্মায়
গাছের গোড়ায় মাটি সংলগ্ন হয়ে গুচ্ছ আকারে ফুল গজায় লতার মত। সেই ফুলগুলো থেকে ফল হয় গুচ্ছ আকারে। প্রতিটি গাছের গোড়া থেকেই ফলন হয়।
এলাচের ফসল উত্তোলন
সাধারনতঃ আষাঢ় মাসে ফুল আসে। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসের শেষদিকে এলাচ পরিপক্ক হয়।
এক্ষেত্রে বাগান থেকে কাঁচা এলাচ সংগ্রহ করে রোদে শুকাতে হয়। সাবধান থাকবে এলাচ না শুকিয়ে ঘরে রাখলে পচন ধরবে।
এলাচ ফল পরিপক্ক হলে দেখতে কিছুটা সবুজের উপর লালচে হবে।
Shariar
April 19, 2022 at 10:01 pmভালো খবর যে সিলেটে এলাচ এর চাষ হচ্ছে । আমাদের দেশে এলাচ বা সাদা ফল এর ব্যপক ব্যবহার হয়। আমাদের সংখ্যা বাড়লে দেশের জন্যই ভালো । বাজারেও ভালো দাম এই মসলার