বগুড়ায় মিলছে না ইউরিয়া সার। ইউরিয়া সার পাচ্ছেননা জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার বিজরুল বাজারের এক সারের ডিলারের দোকানের সামনে গতকাল কয়েক শ কৃষক দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু সকলকেই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। ইউরিয়া সারের জন্য অপেক্ষা করেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর পরেও অনেক কৃষক সার না পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন খালি হাতে। কেউ যদি পেয়েও থাকেন, তবে তার পরিমাণ ছিল চাহিদার তুলনায় খুবই কম।
সার না পাওয়া কয়েকজন কৃষক এর সাথে কথা হয়।
তারা জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ খুবই কম।
অধিকাংশ ডিলারের গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার নেই।
এতে সময়মত প্রয়োজনীয় পরিমাণে সার পাওয়া যাবে না বলে ধারণা তাদের।
এতে ফসলের উৎপাদন ভালো হবে না বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউরিয়ার সারের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে কয়েকজন কৃষক জানান।
তারা আরও বলেন, কিছুদিন আগেই আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে।
সাধারণত চারা লাগানোর দুই সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ইউরিয়া ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হয়।
অথচ চাহিদা অনুযায়ী কোথাও ইউরিয়া সার মিলছে না।
অন্যদিকে ইউরিয়া কেনার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হচ্ছে।
এরপর কৃষি বিভাগ থেকে রসিদ সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
এরপর সেই রসিদ নিয়ে ডিলারের কাছে যেতে হয়।
তবে এরপরেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ইউরিয়া পাওয়া যায়নি।
কৃষকদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।
গতকাল রোববার বিজরুল বাজারের এক ডিলারের দোকান থেকে কৃষকদের ইউরিয়া সার দেওয়া হয়।
ইউরিয়ার চাহিদার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা সরবরাহের ঘাটতির কথা বলেন।
ওই ডিলারের ব্যবস্থাপক বলেন, চাহিদা তুলনায় সারের সরবরাহ অপ্রতুল।
যার কারণে আনুমানিক ৩০০ কৃষককে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা।
তবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তার কাছে অনেক আগেই রসিদ জমা দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।
জাতীয় পরিচয়পত্র সমূহ যাচাই করার পর পর কৃষি কর্মকর্তা একজন কৃষককে এক বস্তা সার সরবরাহের রসিদ দিয়েছেন।
তার দেয়া তথ্য অনুসারে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৪৮০ বস্তা সার বিতরণ করা হয়েছে।
রোববার বিজরুল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, একটি ডিলারের গুদামের সামনে হাজার খানেক কৃষক অপেক্ষা করছেন।
গুদামের পাশেই একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষকের হাতে একটি করে রসিদ ধরিয়ে দিচ্ছেন।
সেই রসিদ নিতেও কৃষকদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
দেখা যায় অনেকেই এক বস্তা ইউরিয়া পেয়েই রাজ্য জয়ের হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
তবে অপরদিকে সার না পেয়ে হতাশ মুখ নিয়ে খালি হাতে ফিরতে দেখা গেছে অনেক কৃষককে।
জানা যায় চলতি মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলায় আমনের চাষ হয় ২০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে।
কিন্তু চলতি মাসে মাত্র ৮৭০ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
চাহিদার তুলনায় সারের বরাদ্দ কম থাকার কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
একজন ডিলার জানান , নন্দীগ্রামে রেকর্ড পরিমান জমিতে আমন চাষ হয়।
কিন্তু সে তুলনায় ইউরিয়ার বরাদ্দ অপ্রতুল।
ঐ ডিলার জানান অন্য উপজেলায় সার বিক্রি নিষিদ্ধ করাও সংকট তৈরির আরেকটি কারণ।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন।
তিনি বলেন, আগস্ট মাসের জন্য ৯ হাজার ৩৫৫ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ মিলেছে।
তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে সাত হাজার মেট্রিক টন সার।