Sunday, 24 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

ইউরিয়া কিনতে ঠকছেন কৃষক, বস্তায় ৫০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি


ইউরিয়া সার

বছরের এই সময়টায় আমন ধানের খেতে সার দেওয়ার মূল সময়। এর মধ্যে ইউরিয়া সার বেশি পরিমাণে দেওয়া হয়। কিন্তু ইউরিয়া কিনতে ঠকছেন কৃষক, এমন অভিযোগ উঠেছে। সবাই বেশি দামে ইউরিয়া সার বিক্রি করছেন, তা হোক ডিলার থেকে খুচরা ব্যবসায়ী। সরকার নির্ধারিত ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ইউরিয়ার দাম ৮০০ টাকা। কিন্তু দেশের যশোর, ফরিদপুর, নওগাঁ ও টাঙ্গাইল জেলায় প্রতি বস্তা সারে ৫০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার প্রয়োজন হয় সারা দেশে। এর মধ্যে ইউরিয়া বেশি ব্যবহৃত হয় সেপ্টেম্বর মাসে । এ মাসের জন্য সারা দেশে চাহিদা ১ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন সার। এখন পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ।

যদিও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ অবশ্য বলেন, কিছুদিন আগে সারের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছিল বরিশাল, খুলনা অঞ্চলে সেটি মেটানো হয়েছে। এই অবস্থায়  ইউরিয়া সারের সংকট কিংবা বেশি দামে বিক্রি করার তথ্য তাঁদের কাছে নেই।

আরো পড়ুন
পান চাষ পদ্ধতি

পান চাষ একটি লাভজনক কৃষি পদ্ধতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশে এটি ব্যাপক চাষ করা হয়। Read more

মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

দাম বেশি যশোর অঞ্চলে

যশোরে প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৪০০ টাকা বেশি দরে  বিক্রি হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। অভয়নগর উপজেলার একজন কৃষক জানান ১ হাজার ২০০ টাকায় এক বস্তা ইউরিয়া কিনে জমিতে প্রয়োগ করেছেন। প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের সরকারি দাম ১৬ টাকা হলেও প্রতি কেজির দাম পড়েছে ২৪ টাকা।

বাঘারপাড়া উপজেলার একজন কৃষক জানান, তিনি এ পর্যন্ত ছয় বস্তা ইউরিয়া কিনে জমিতে প্রয়োগ করেছেন। তিনি বলেন প্রথম দুই বস্তা ইউরিয়া ৯৫০ টাকা এবং পরের চার বস্তা ইউরিয়া ৯২০ টাকা করে কিনেছেন। সরকারি দাম তার জানা নেই।

যশোর জেলায় বিসিআইসির নিবন্ধনধারী ডিলার রয়েছেন ১৪২ জন, সরকার নির্ধারিত ৬৫৭ জন খুচরা সার ব্যবসায়ী আছেন। কৃষি কর্মকর্তা ও ডিলাররা জানান,  ইউরিয়ার বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার ৯৩৩ মেট্রিক টন থাকলেও উত্তোলন করা হয়েছে ৫ হাজার ৮৫ মেট্রিক টন।

ফরিদপুর জেলায় সারের ডিলার ৯৬ জন এবং খুচরা সার বিক্রেতা ৭২৯ জন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় ফরিদপুরে বছরে ইউরিয়ার চাহিদা ৭৭ হাজার মেট্রিক টন থাকলেও ৩৯ হাজার মেট্রিক টন বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

ডিলারের দাবি দাম কম, কৃষকের দাবি দাম বেশি

ফরিদপুর জেলা শহরের টেপাখোলা মহল্লায় একজন  খুচরা সার বিক্রেতা বলেন, সারের দাম বাড়ছে ডিলারদের কারসাজিতে। কৃষকেরা বাধ্য হচ্ছেন বেশি দামে সার কিনতে।

যদিও স্থানীয় ডিলার জানান যে তাঁরা বেশি দামে সার বিক্রি করেন না  কিন্তু মাঝেমধ্যে সারের সরবরাহ পেতে সমস্যায় পড়েন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হযরত আলী অবশ্য জানান জেলায় সারের সংকট হবার কথা নয়।

দাম বেড়েছে নওঁগায়

ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে বলে জানান নওগাঁর একাধিক কৃষক। তাঁদের অভিযোগ মৌসুমের শুরুতে ৮১০-৮২০ টাকা দরে প্রতি বস্তা সার বিক্রি হলেও হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেছে। ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিনা নোটিশেই। প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার ৮৬০-৯২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

পাহাড়পুর বাজারের খুচরা সার বিক্রেতারা  বলেন, ডিলারদের কাছ থেকেই তাঁদের ৮৬০-৮৭০ টাকায় প্রতি বস্তা ইউরিয়া কিনছে। পরিবহন খরচ যোগ করে খুচরা পর্যায়ে  ৮৯০-৯০০ টাকা বস্তা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

0 comments on “ইউরিয়া কিনতে ঠকছেন কৃষক, বস্তায় ৫০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *