বাজারে এসেছে টক-মিষ্টি স্বাদের মৌসুমী ‘সিলেটি কমলা’। শীতে অন্য কমলার চেয়ে এর চাহিদা তুলনামূলক বেশি। এই ফল খেতে দারুণ লাগে। এ ফলে রয়েছে নানা ওষুধিগুণ, যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
তবে সিলেটি কমলা মানেই সিলেটের জমিতে চাষবাদ করা কমলা নয়। সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতের এ কমলা বাংলাদেশে প্রবেশ করে বলে একে বলা হয় সিলেটি কমলা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ক্লাসিক ফল ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সালাম বলেন,‘বাজারে এ কমলা প্রায় জানুয়ারি থেকে মার্চের শেষ কিংবা এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকবে। তারপর আবার এক বছরের অপেক্ষা। আমার কাছে আরেক জাতের কমলা আছে, আমরা আঞ্চলিক ভাষায় চোষা কমলা বলি। এটার চেয়ে সিলেটি কমলার বেশি সুস্বাদু। প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। ’
শ্রীমঙ্গল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, ‘সিলেটি কমলা নামে অধিক পরিচিত এ কমলা হল‘দার্জিলিং কমলা’। বাজারে এ কমলার চাহিদা বেশি এবং খেতেও সুস্বাদু। ’
তিনি বলেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করে দেখেছি যে, দার্জিলিংয়ের সেই কমলা আমাদের দেশেও চাষাবাদ করা সম্ভব। আমাদের ইচ্ছে সিলেটের এ কমলা যেন আমরা মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চাষ করতে পারি। এ পর্যায়ে আমরা শ্রীমঙ্গল উপজেলায় নোয়াগাঁও, বিষামণি-সহ অন্য এলাকায় প্রায় ১৬টি বাগান করেছি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্থানীয় কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষকরা যেন কমলার ফলন আগাম বিক্রি না করে। দেখা যায়, কমলাগুলো পরিপূর্ণভাবে না পাকতেই আধাপাকা কমলাগুলো বিক্রি করে দেয়। এতে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই আমরা কমলা চাষিদের নানা ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। ’
আবহাওয়া এবং মাটির ওপর নির্ভর করে সব ধরনের ফল। দার্জিলিং কমলা শীতকালীন ফল। এ কমলার বৈশিষ্ট্য হলো পাহাড়ি এলাকায় এটি উৎপন্ন হয়। মাটিতে পিএইচ এর মাত্রা কম অর্থাৎ সাড়ে ৫ বা ৬ থাকতে হবে। তাহলে লেবু জাতীয় ফলের ফলন ভালো হয়। ভারতের দার্জিলিং শহরের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো- উপযোগী, পাহাড়ি এলাকা এবং মাটির চমৎকার গুণাগুণ। এজন্য তারা কমলা জাতীয় ফল উৎপাদনে অনেক এগিয়ে আছে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।