Thursday, 06 November, 2025

দেশি মুরগির মতই নতুন জাতের মুরগি উদ্ভাবন গবেষকদের


Multicolor Table chicken

বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট একটি নতুন দেশীয় জাতের মুরগি উদ্ভাবন করে, এই মুরগির পালক বহুবর্ণ হবার কারণে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন।’

২০১৪ সালে থেকে গবেষনাকৃত এই মুরগীর পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করার কাজ শুরু করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের পোল্ট্রি উৎপাদন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শাকিলা ফারুক বলেছেন, নতুন এই জাত মূলত মাংসের জাত। এটি দ্রুত পরিপূর্ণ আকার ধারণ করে অর্থাৎ খাওয়ার উপযোগী হয়।

আরো পড়ুন
পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতা: সপ্তাহেই দাম বাড়লো ২০-২৫ টাকা
পেঁয়াজের দামে হঠাৎ মৌসুম শেষের অস্থিরতা

চলতি বছর দেশীয় পেঁয়াজ প্রায় পুরোটা সময়ই বাজারের চাহিদা মিটিয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও পেঁয়াজ মৌসুমের শেষ সময়ে এসে বাজারে Read more

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময়সীমা বাড়লো: ৫০ প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন সুযোগ
রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চাল

রপ্তানির সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর অবশেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সোমবার Read more

তিনি বলেছেন, “উদ্ভাবিত হয়েছে দেশে মুরগির মাংসের চাহিদাকে মাথায় রেখে। এই মুরগি আট সপ্তাহ মানে ৫৬দিনে মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হবে।”

মাল্টি কালার টেবিল মুরগীর বৈশিষ্ট্য

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের শাকিলা ফারুক বলেছেন, “মাল্টি কালার টেবিল চিকেন খুব দ্রুত বাড়ে। এটি মাংস খাওয়ার জন্য উৎপাদন করা হবে, ডিমের জন্য ব্যবহার করা হবে না। আট সপ্তাহের মধ্যে এর ওজন সাড়ে নয়শ’ গ্রাম থেকে এক কেজির মত ওজন হয়।”

কিন্তু এর স্বাদ এবং মাংসের গুণাগুণ দেশি মুরগির মতই।

মুরগির শারীরিক গঠন, ঠোট ও ঝুঁটি দেশি মুরগির মত, এর পালকও অনেক রঙ এর হয়।

এই মুরগি দেখতে দেশীয় জাতের মুরগির মত। এই মুরগিকে দেশীয় ব্রয়লার বলে থাকেন কেউ কেউ।

প্রাথমিক অবস্থায় খুলনা, বরিশাল এবং পাবনায় পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়েছে।

এখন খুব অল্প পরিসরে মাল্টি কালার টেবিল চিকেন উৎপাদন করা হচ্ছে।

শাকিলা ফারুক জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে চারটি সরকারি এবং দু’টি বেসরকারি খামারে নতুন জাতের মুরগি উৎপাদন করা হচ্ছে।

এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করার জন্য আফতাব বহুমুখী ফার্মসের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট।

এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট এখনও যৌথ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

নতুন জাত উদ্ভাবনে বিদেশি জাত এবং দেশীয় কয়েক জাতের মুরগির জার্মপ্লাজম মিলিয়ে করা হয়েছে।

মাল্টি কালার টেবিল চিকেন বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এ মুরগির মৃত্যু হার অনেক কম।

শাকিলা ফারুক বলেছেন, এখনও পর্যন্ত গবেষণায় দেখা গেছে আট সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত মাল্টি কালার টেবিল চিকেনের মৃত্যুহার ২ শতাংশের নিচে।

ব্রয়লার ও অন্যান্য মুরগির সাথে মাল্টি কালার টেবিল মুরগীর পার্থক্য 

বাংলাদেশে গত এক দশকে মুরগির চাহিদা এবং ব্যবহার অনেকগুন বেড়েছে এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগি যেমন রয়েছে, তেমনি দেশি মুরগি, সোনালী মুরগি, যা পাকিস্তানি মুরগি নামেও পরিচিত এগুলো বেশ জনপ্রিয়।

এই মুরগিগুলোর মাঝে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।

ব্রয়লার মুরগি ২৮-৩২ দিনে খাওয়ার উপযোগী হয়, অর্থাৎ ওই সময়ের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ওজন এক থেকে দেড় কেজি হয়।

Multicolor Table chicken
Multicolor Table chicken

সোনালি মুরগির এক কেজি ওজনে পৌঁছাতে সময় লাগে ৭০-৮০ দিন।

কিন্তু মাল্টি কালার টেবিল চিকেন বাজারজাত করতে অন্তত আট সপ্তাহ সময় প্রয়োজন হবে।

ব্রয়লার মুরগির মাংস ও হাড় নরম হয়, কিন্তু মাল্টি কালার টেবিল চিকেনের মাংস ও হাড় দেশি মুরগির মত শক্ত।

ব্রয়লার মুরগি পালনে বড় জায়গা, নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা এবং আলো-বাতাসের দরকার হয়, কিন্তু এ মুরগি পালনের ক্ষেত্রে দেশি জাতের মুরগির মত খোলা জায়গায় পালন করা যায়।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে, এই মুরগি লালনপালন সহজ, ফলে প্রান্তিক খামারীদের জন্য এটি পালন সহজ হবে এবং ফলে আর্থিকভাবে লাভবান হবার সুযোগ বেশি থাকবে।

0 comments on “দেশি মুরগির মতই নতুন জাতের মুরগি উদ্ভাবন গবেষকদের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ