মাটি অম্লীয় হওয়ায় ফসল উৎপাদনে মাত্রাতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেন পঞ্চগড়ের চাষিরা। চাহিদা এবং উর্বরতা পরিমিত পরিমানে সার ব্যবহার না হওয়ায় কমে যাচ্ছে মাটির স্বাস্থ্য ও পুষ্টি। খরচ বেড়ে যাবার কারণে লাভ কম হয় চাষিদের।
দীর্ঘদিন পর মাটির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে মাটির স্বাস্থ্য ঠিক রেখে উর্বরতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী কি ধরনের সার ব্যবহার করা প্রয়োজন এই বিষয়ের উপর তিনবছর ধরে গবেষণা করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ। পঞ্চগড় এবং ময়মনসিংহ এলাকায় এই গবেষণা কার্যক্রম চলছে।
বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি ফেলো শিক্ষার্থী রুবিনা ইয়াসমিন তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের হাওয়া জোত এলাকায় পরিক্ষণ প্লট স্থাপন করে এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
তিনি জানান, চাষিরা অনেকসময় অযথা বেশী পরিমাণে সার প্রয়োগ করেন। যে সারের দরকার তা ব্যবহার করেন না। এ অঞ্চলের জমিতে কি কি ধরণের সার প্রয়োজন হবে আমি সে বিষয়েই গবেষণা করছি। সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করে কৃষক যেন অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক ফসল উতপাদন করতে পারেন তাই গবেষণার উদ্দেশ্য।
পরিক্ষণ প্লটে গম ও সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এর আগে ওই জমিতে সালফার, ম্যাগনেশিয়ম, বোরন এবং উর্বরতার মাত্রা নির্ণয় করা হয়। পরে প্রয়োজন অনুযায়ি সার প্রয়োগ করে গম ও সরিষার বীজ ফেলা হয়। বর্তমানে আশে পাশের অন্যান্য কৃষি জমিতে লাগানো গম ও সরিষার আবাদ থেকে পরিক্ষণ প্লটের গাছগুলোর ফলন দ্বিগুণ হয়েছে।
প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আবেদিন জানান, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার রিসার্চ ইন্সটিটিউট এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই গবেষণা কার্যক্রম তত্বাবধান করছে।
তিনি আরও বলেন, গবেষণায় ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী কৃষি উন্নয়নে সার প্রয়োগে একটি নতুন দিক উম্মোচন হবে।