Saturday, 02 August, 2025

মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এমনকি অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধ করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে বাধাপ্রাপ্ত হলেও তারা পিছপা হননি। এটি আমাদের এগিয়ে যাবার মূলমন্ত্র। এভাবে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৮ মে) বিকেলে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫ দিন সব প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন
রাক্ষুসী মাছ নিধনে ফসটক্সিন এর ব্যবহার এবং সতর্কতা

ফসটক্সিন (মূলত অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড) একটি অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক, যা ফসফিন গ্যাস উৎপন্ন করে। এটি সাধারণত গুদামজাত শস্যের পোকা দমন, ধান Read more

বন্যা পরবর্তী মাছ চাষিদের করণীয়

বন্যা মাছ চাষিদের জন্য একটি মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাছ চাষে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে Read more

এ সময় রেজাউল করিম বলেন, মৎস্য দেশের বড় সম্পদ। এ সম্পদের কথা বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছিলেন, মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ। বর্তমান সরকারের নানা পদক্ষেপে সে মাছ আজ বাংলাদেশে সহজলভ্য হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছ আমরা ফিরিয়ে এনেছি। ইতোপূর্বে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, মৎস্যজীবী সমিতি ও সংগঠন সম্মিলিতভাবে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। রাষ্ট্রের একটি অংশ হিসেবে সবাই মিলে দায়িত্ব পালন করেছেন। এমনকি অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধ করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে বাধাপ্রাপ্ত হলেও তারা পিছপা হননি। এটি আমাদের এগিয়ে যাবার মূলমন্ত্র। এভাবে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

নতুন প্রণীত সামুদ্রিক মৎস্য আইন নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য আইনের অপপ্রয়োগের কোনো অভিযোগ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তারপরও এ আইনের অপপ্রয়োগ দেখলে সেটি বন্ধ করা হবে। তাই এ আইন নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। তবে অকারণে কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে হবে। মৎস্যজীবী সম্প্রদায়সহ জনগণকে মৎস্য সম্পদ রক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে হবে।

তিনি বলেন, করোনা সংকটে সরকারের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। তারা অর্পিত দায়িত্ব পালনে কোনোরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন করেননি। করোনায় মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা বিশেষ করে মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে। মানুষের দোরগোড়ায় এ মন্ত্রণালয় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম পৌঁছে দিয়েছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের আন্তরিকতা, একাগ্রতা ও উৎসর্গের কারণে করোনাকালেও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নতি সম্ভব হয়েছে।

এ সময় যেখানে বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রের অর্থনীতি নুয়ে পড়ছে সেখানে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অসাধারণ। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন-যোগ করেন মন্ত্রী।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মো. তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ, নৌপুলিশের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক মো. আতিকুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপ-পরিচালক শেফাউল করিম, সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর, চট্টগ্রামের পরিচালক ও বন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নৌ বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতি ও বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিসহ মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা সভায় অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন।

দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ অনুযায়ী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০১৫ সাল থেকে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে মন্ত্রণালয়। এ বছর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালে দেশের উপকূলীয় ১৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯৫টি জেলে পরিবারকে ১৬ হাজার ৭২১.৩২ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল ইতোমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

0 comments on “মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ