মুক্তা চাষ একটি বিশেষ পদ্ধতি যা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে মুক্তা উৎপাদন করা সম্ভব। মুক্তা চাষের পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো:
১. উপযুক্ত স্থান নির্বাচন:
মুক্তা চাষের জন্য পরিষ্কার এবং স্থির পানির জলাশয় নির্বাচন করা হয়। এটি পুকুর, খাল, নদী বা কৃত্রিম জলাশয় হতে পারে।
২. ঝিনুক সংগ্রহ:
মুক্তা উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের ঝিনুক প্রয়োজন। সাধারণত Pinctada এবং Hyriopsis জেনাসের ঝিনুক ব্যবহার করা হয়। এগুলো প্রাকৃতিকভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে বা ঝিনুক চাষ ক্ষেত্র থেকে নেওয়া যেতে পারে।
৩. সংক্রমণ (গ্রাফটিং):
মুক্তা উৎপাদনের জন্য ঝিনুকের মধ্যে একটি ছোট বস্তুর (নিউক্লিয়াস) প্রবেশ করানো হয়। এই প্রক্রিয়াটি গ্রাফটিং নামে পরিচিত। নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঝিনুক শেল সৃষ্টিকারী টিস্যু (ম্যান্তেল টিস্যু) প্রবেশ করানো হয়।
৪. যত্ন এবং পুষ্টি:
ঝিনুকগুলোকে বিশেষ খাঁচায় রেখে পানিতে ডুবানো হয়। এদের যথাযথভাবে পুষ্টি সরবরাহ করতে হয়, যা সাধারণত ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন এবং ছোট আণুবীক্ষণিক খাবার দিয়ে হয়।
৫. নিয়মিত পরিদর্শন:
ঝিনুকগুলো নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করতে হয় যাতে কোনও রোগ বা পরজীবী আক্রমণ না হয়। এছাড়াও, ঝিনুকগুলো সঠিকভাবে বড় হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হয়।
৬. মুক্তা সংগ্রহ:
৬ মাস থেকে ৩ বছর পর্যন্ত সময় লাগে মুক্তা সম্পূর্ণরূপে পরিপক্ক হতে। নির্দিষ্ট সময় পরে ঝিনুকগুলোকে পানির বাইরে এনে মুক্তা সংগ্রহ করা হয়।
৭. মুক্তার প্রক্রিয়াকরণ:
মুক্তা সংগ্রহের পর সেগুলোকে পরিষ্কার ও প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এতে মুক্তার সৌন্দর্য এবং গুণগত মান বাড়ানো হয়।
মুক্তা চাষ একটি ধৈর্যশীল এবং প্রযুক্তিগত পদ্ধতি, যার মাধ্যমে উচ্চমানের মুক্তা উৎপাদন করা সম্ভব।