মনোসেক্স তেলাপিয়া কি?
মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ মানে পুরুষ তেলাপিয়া চাষ। সঠিক বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তেলাপিয়া মাছ কে হরমোন খাওয়ানোর মাধ্যমে সকল মাছ কে পুরুষ মাছে রুপান্তর করা হয়। এবং শুধু পুরুষ মাছকে বলা হয় মনোসেক্স তেলাপিয়া। মনোসেক্স তেলাপিয়া একটি দ্রুত বর্ধনশীল মাছ।
যদি সঠিক চাষ ব্যবস্থাপনা করা হয় তাহলে অপেক্ষাকৃত অধিক ঘনত্বেও ৩-৪ মাসে একেকটি মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ ২৫০-৩৫০ গ্রাম ওজন হয়ে থাকে। অল্প সময়ে অধিক উৎপাদন, সহজ চাষ পদ্ধতি এবং বাজারে চাহিদা থাকায় এ মাছের চাষ অত্যন্ত লাভজনক।
মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ চাষে সাফল্যের পূর্বশর্ত হচ্ছে সুস্থ্য-সবল ও উন্নত জাতের ১০০% পুরুষ পোনা সংগ্রহ ও সঠিক পদ্ধতিতে মজুদ ও লালনপালন করা। বিশেষ করে নার্সারি পর্যায়ে অত্যন্ত যত্নের সাথে পরিচর্যা করতে হয়।
নতুবা মৃত্যুহার অনাকাংক্ষিতভাবে বেড়ে যেতে পারে। ভাল ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রয়োজন ভাল চাষ ব্যবস্থাপনা। মাছ চাষের প্রতিটি ধাপে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে লাভজনক মাছ চাষ করা যায়।
নার্সারি পুকুর নির্বাচন
১। নার্সারির জন্য ছোট আকারের পুকুরই আদর্শ পুকুর। সাধারণত ২০-২৫ শতাংশ হলে ভাল হয়।
২। নার্সারি পুকুরটি আয়তাকার, বন্যামুক্ত ও বেলে-দোআঁশ মাটি বিশিষ্ট হলে ভাল হয়।
৩। নার্সারির ক্ষেত্রে পানির আদর্শ গভীরতা ৩-৪ ফুট। পানির গভিরতা এর কম না হওয়া ভাল।
৪। পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ার সুযোগ থাকলে প্রাকৃতিক খাদ্য বেশি তৈরি হয়।
নার্সারি পুকুর প্রস্তুতি
১। জলাশয়ের পুরাতন পানি সম্পূর্ণরুপে অপসারণ করে পুকুরের তলা ৭-৮ দিন রৌদ্রে ভালভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। তলায় অতিরিক্ত কাদা থাকলে তা অপসারণ করে ফেলতে হবে।
পুরাতন পানি সম্পূর্ণরুপে অপসারণ করা না গেলে, যথাসম্ভব পানি কমিয়ে প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট পানির গভীরতায় ৩০-৪০ গ্রাম হারে রোটেনন পাউডার প্রয়োগ করে সকল মাছ ও অনাকাংক্ষিত প্রাণী দূর করতে হবে।
২। প্রয়োজনীয় মোট রোটেননের দুই-তৃতীয়াংশ পানিতে গুলিয়ে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে এবং একই সাথে অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ অল্প পানিতে পেস্ট করে ছোট ছোট বল বানিয়ে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
সম্পূর্ণরুপে রাক্ষুসে মাছ অপসারণ নিশ্চিত করতে পুকুর শুকিয়ে তলার কাদায়ও রোটেনন প্রয়োগ করা যায়। এতে কাদার ভিতরে থাকা সব মাছ মারা যায়।
এছাড়া গ্যাস ট্যাবলেট বা ফোসটক্সিন ট্যাবলেট ব্যাবহার করে ও রাক্ষুসে মাছ মারা যায়।
৩। পুকুরের তলা ও পাড় থেকে সকল জলজ উদ্ভিদ ও আগাছা দূর করতে হবে। প্রয়োজন হলে পাড় মেরামত করে নিতে হবে। পাড়ে বড় গাছ থাকলে ডালপালা কেটে ছোট করতে হবে যেন পাতা পড়ে পানি নষ্ট না হয় এবং পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়তে পারে।
৪। পুকুর শুকানো বা রাক্ষুসে ও অনাকাংক্ষিত মাছ দূর করার ২/৩ দিন পর প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে।
চুন পানিতে গুলিয়ে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। উল্লেখ্য, ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে চুনের দ্রবণ ঠান্ডা হওয়ার পরই ছিটাতে হবে এবং মাস্ক বা সুবিধাজনক কাপড় দিয়ে ব্যবহারকারীর নাক ও মুখ ঢেকে নিতে হবে।
৫। চুন প্রয়োগের ৩/৪ দিন পর পুকুরে পানি প্রবেশ করাতে হবে। পুকুরে গভীর নলকূপের পানি প্রবেশ করানোই উত্তম। নদী, খাল-বিল বা অন্য কোন পুকরের পানি ব্যবহার করতে হলে পানি প্রবেশমুখে সূক্ষ ছিদ্রবিশিষ্ট ফিল্টার নেট স্থাপন করতে হবে যেন কোনপ্রকার অনাকাংক্ষিত প্রাণী প্রবেশ করতে না পারে।
৬। পানি দেয়ার পরপরই (অন্যভাবে চুন প্রয়োগের ৩/৪ দিন পর) পুকুরে সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি শতাংশে ৫ কেজি জৈব সার (পঁচা গোবর/কম্পোস্ট), ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ২৫ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার দিতে হবে।
৭। সার প্রয়োগের ৫/৬ দিন পর পানির রং সবুজাভ বা হালকা বাদামী হবে যা পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্যের (প্ল্যাংকটন) উপস্থিতি নির্দেশ করে। এসময় পুকুরে পোনা ছাড়তে হয়।
পানির প্ল্যাংকটন জনিত সচ্ছতা ৮-১২ ইঞ্চি হওয়া ভাল। প্ল্যাংকটনের স্বল্পতা কিংবা আধিক্য উভই মাছ চাষের জন্য ক্ষতিকর।
৮। পুকুরের চারপাশ ফিল্টার নেট দিয়ে ঘিরে ফেলতে হবে যেন সাপ, ব্যাঙ ও অন্যান্য অনাকাংক্ষিত প্রাণী ঢুকতে না পারে।
নার্সারী পুকুরে পোনা মজুদ
নার্সারী পুকুরে পোনা মজুদ পোনা মাছ চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। পোনার বেঁচে থাকার হার নার্সারী পুকুরে পোনা মজুদের উপর নির্ভর করে।
১। প্রতি শতাংশে ০.১২৫-০.৫ গ্রাম ওজনের ২,০০০-৩,০০০টি মনোসেক্স তেলাপিয়া পোনা মজুদ করতে হবে।
২। পোনা মজুদ করার আগে পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা করে নেয়া ভাল। পুকুরে হাপা রেখে অল্প পরিমাণ পোনা ছেড়ে দেখতে হবে কোন পোনা মারা না যায় কিনা। যদি ৩-৪ ঘন্টায় কোন পোনা মারা না যায় তাহলে বুঝতে হবে বিষাক্ততা নাই।
যদি পোনা মারা যায় তাহলে বিষাক্ততা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আবার পুকুর থেকে ১ বালতি পানি এনে সেই পানিতে কিছু পোনা ছেড়েও বিষাক্ততা পরীক্ষা করা যায়।
৩। পোনা ছাড়ার পূর্বে পোনার ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানির তাপমাত্রায় সমতা আনতে হবে। এজন্য পোনার ব্যাগটি ৩০-৪০ মিনিট ধরে পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে রাখতে হবে এবং ব্যাগে একটু একটু করে পুকুরের পানি ছিটিয়ে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা সমান করতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে পোনা ছাড়তে হবে।
৪। পোনা ছাড়ার আগে ৫ পিপিটি (১ লিটার পানিতে ৫ গ্রাম) লবণ পানিতে ১-২ মিনিট ধরে শোধন করে নিতে হবে। পোনা পরিবহণের প্যাকেটে প্রয়োজনীয় লবণ যোগ করে একাজ সম্পন্ন করা যায়।
৫। পোনা ছাড়ার পরপরই প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে সমস্ত পুকুরে লবণ প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি অন্যান্য জীবাণুনাশকও যথাযথ মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬। ঠান্ডা পরিবেশে (সকালে অথবা বিকালে) পোনা ছাড়া উত্তম।
৭। বৃষ্টি অথবা নিম্ন চাপের দিনে পোনা ছাড়া ঠিক নয়।
নার্সারি পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ
সঠিক মাত্রায় খাদ্য প্রয়োগে খাদ্যের অপচয় এবং পুকুরের পানির নষ্ট হওয়া থেকে বাচায়। সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ৩০-৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ ভালমানের তেলাপিয়া নার্সারি ফিড (ভাসমান) নিমোক্ত হারে প্রয়োগ করতে হবে।
পালনকাল | পোনার ওজন | খাদ্যের ধরণ | দৈনিক প্রয়োগ মাত্রা (দেহ ওজনের শতকরা হার) | দৈনিক প্রয়োগ |
১-৭ দিন | ০.১৩-১ গ্রাম | নার্সারি ফিড | ৩৫-৩০% | ৪ বার |
৮-১৪ দিন | ২-৩ গ্রাম | নার্সারি ফিড | ৩০-২০% | ৩-৪ বার |
১৫-২১ দিন | ৪-৫ গ্রাম | নার্সারি ফিড | ২০-১৫% | ৩-৪ বার |
নার্সারি পুকুরে ২০-২১ দিন লালনের পর পোনার গড় ওজন হবে ৫ গ্রাম (প্রতি কেজিতে ২০০টি) যা চাষের পুকুরে মজুদ করতে হবে।
চাষের পুকুরে পোনা মজুদ
পোনা ছাড়ার পূর্বে যথাযথ নিয়মে পুকুর প্রস্তুত করে নিতে হবে। প্রতি শতাংশে ১৫০-২৫০টি তেলাপিয়া ও ১৫-৩০টি বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছের পোনা মজুদ করা যায়। তবে উন্নততর চাষ ব্যবস্থাপনায় মজুদ ঘনত্ব আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব।
নিমোক্ত পোনা মজুদের তিনটি মডেল দেখানো হল।
প্রতি শতাংশে পোনার সংখ্যা | |||
প্রজাতি | মডেল ১ | মডেল ২ | মডেল ৩ |
মনোসেক্স তেলাপিয়া | ১৫০ | ২০০ | ২৫০ |
সিলভার কার্প | ৫ | ৫ | ৪ |
বিগহেড কার্প | ৪ | ৩ | ৩ |
কাতলা | ২ | ২ | ১ |
রুই | ৬ | ৪ | ২ |
মৃগেল/কালিবাউস | ৬ | ৩ | ৩ |
মিরর কার্প/কমন কার্প | ২ | ২ | ১ |
ঘনিয়া/বাটা | ১ | ২ | ১ |
গ্রাস কার্প | ১ | ১ | ০ |
সরপুটি | ৩ | ৩ | ০ |
মোট | ১৮০ | ২২৫ | ২৬৫ |
কিছু লক্ষণীয় বিষয়:
১। সকাল বা বিকাল বেলায় (যখন তাপমাত্রা কম থাকে) পোনা ছাড়তে হয়।
২। পোনা ছাড়ার আগে অবশ্যই পুকুরের পানির সাথে অভ্যস্থকরন করতে হবে।
৩। পোনা বহনকারী পাত্রে ৫ পিপিটি (১ লিটার পানিতে ৫ গ্রাম) হারে লবণ যোগ করে ১-২ মিনিট ধরে পোনা শোধন করে নিতে হবে।
৪। পুকুরের পানির তাপমাত্রা ও বহনকারী পাত্রের পানির তাপমাত্রা সমান হবার পর পাত্র থেকে পোনা ধীরে ধীরে পুকুরে স্থাপিত হাপায় রাখতে হবে। প্রায় ১ ঘন্টা পর হাপা থেকে গুনে গুনে ভাল ও সতেজ পোনাগুলি পুকুরে ছাড়তে হবে। দূর্বল পোনা পুকুরে ছাড়া যাবেনা।
৫। পোনা মজুদের পরপরই প্রতি শতাংশে ৫০০ গ্রাম হারে সমস্ত পুকুরে লবণ প্রয়োগ করতে হবে।
চাষের পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ
পোনা মজুদের পরের দিন থেকে ২৮%-৩০% প্রোটিন সমৃদ্ধ ভালমানের ভাসমান খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। নিমোক্ত খাদ্য প্রয়োগের নিয়ম দেয়া হল।
পালনকাল | পোনার ওজন | খাদ্যের ধরণ | দৈনিক প্রয়োগ মাত্রা (দেহ ওজনের শতকরা হার) | দৈনিক প্রয়োগ |
১-১৫ দিন | ৫-১৫ গ্রাম | স্টার্টার (ক্রাম্বল) | ২০-১৫% | ৩ বার |
১৬-৩০ দিন | ১৫-৪০ গ্রাম | স্টার্টার (পিলেট) | ১০-৮% | ৩ বার |
৩১-৬০ দিন | ৪০-১০০ গ্রাম | গ্রোয়ার | ৭-৫% | ২ বার |
৬১-১০০ দিন | ১০০ গ্রাম এর বেশি | ফিনিসার | ৩-২% | ২ বার |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
তেলাপিয়া চাষের আর ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যেগুলো পালন আবশ্যক। তেলাপিয়া বিষয়ে আরও জানতে লিঙ্কের লেখা গুলো পড়তে পারেন।
১। মাছের বেঁচে থাকার হার, দৈহিক বৃদ্ধি ও খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা পর্যালোচনা করে খাদ্য প্রয়োগের মাত্রা সমন্বয় করতে হবে।
২। প্রতি ৭ দিন পরপর অল্প কিছু মাছ ধরে তাদের দৈহিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
৩। এক মাস পরপর প্রতি শতাংশে ২০০ গ্রাম চুন ও ৫০০ গ্রাম লবণ প্রয়োগ করতে হবে।
৪। পাশাপাশি অন্যান্য জীবাণুনাশকও যথাযথ মাত্রায় নিয়মিত ব্যবহার করা ভাল।
৫। পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য কমে গেলে প্রতি শতাংশে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
৬। পানি অধিক সবুজ ও শেওলাযুক্ত হয়ে গেলে নতুন পানি দিতে হবে এবং কয়েকদিন খাদ্য প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।
৭। ভোর বেলায় অক্সিজেনের অভাবে মাছ ভেসে উঠতে পারে। পরিস্থিতি প্রকট হওয়ার পূর্বেই পানির ঝাপটা বা অক্সিজেন ট্যাবলেট বা নতুন পানি দিয়ে বা এ্যারেটর চালিয়ে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়াতে হবে।
৮। কয়েকদিন ধরে বিরাজমান অতিরিক্ত গরম কিংবা মেঘাচ্ছন্ন দিনেও অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এরুপ পরিস্থিতে পানিতে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রয়োজন হলে মজুদ ঘনত্বও কিছুটা কমাতে হবে।
৯। মাসে একবার হররা বা জাল টেনে বিষাক্ত গ্যাস বের করে দিতে হবে।
১০। প্রতি মাসে ২০-৩০% পানি পরিবর্তন করা ভাল।
১১। মেঘলা দিনে সার বা খাবার দেয়া যাবে না।
মাছ আহরণ ও বিক্রয়
মাছ আহরন এবং বিক্রয় নিয়ে আরো বিশদ জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়তে পারেন। পুকুরের সব মাছ একই হারে বড় হয়না। তাই পোনা মজুদের ৮০-৯০ দিন থেকে বাছাই করে বড় মাছগুলি বিক্রয় শুরু করা উচিৎ। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়, আবার ছোট মাছগুলিও দ্রুত বড় হওয়ার সুয়োগ পায়।
সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করে পূর্বে প্রদর্শিত মজুদ ঘনত্বের মডেল ৩ অনুসারে এক শতাংশ জলায়তন থেকে প্রতি চক্রে (৩-৪ মাসে) ৫৫-৬০ কেজি তেলাপিয়া ও ৮-১০ কেজি কার্প মাছ উৎপাদন করা সম্ভব।
আয়-ব্যয়
নিম্নে এক একরের (১০০ শতক) একটি পুকুরে পূর্বে প্রদর্শিত মজুদ ঘনত্বের মডেল ৩ অনুসারে চার মাসের এক চক্রে তেলাপিয়া ও কার্প চাষের আনুমানিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয়া হল।
আয়:
ক্রমিক নং | বিবরণ | পরিমাণ | একক মূল্য (টাকা) | মোট মূল্য (টাকা) |
১ | তেলাপিয়া বিক্রয় | ৫,৫০০ কেজি | ৯৫ | ৫,২২,৫০০ |
২ | কার্প মাছ বিক্রয় | ৫০০ কেজি | ১৩০ | ৬৫,০০০ |
মোট আয় | ৫,৮৭,৫০০ |
ব্যয়:
ক্রমিক নং | বিবরণ | পরিমাণ | একক মূল্য (টাকা) | মোট মূল্য (টাকা) |
১ | পুকুর প্রস্তুতি (পুকুর শুকানো, আগাছা পরিস্কার ইত্যাদি) | থোক | – | ৫,০০০ |
২ | চুন | ২০০ কেজি | ১৫ | ৩,০০০ |
৩ | লবণ | ২৫০ কেজি | ১৬ | ৪,০০০ |
৪ | সার | ৬০ কেজি | ২৫ | ১,৫০০ |
৫ | পানি সরবরাহ | থোক | ৫,০০০ | |
৬ | তেলাপিয়া পোনা | ২৮,০০০ টি | ১.২০ | ৩৩,৬০০ |
৭ | কার্প পোনা | ১,৫০০ টি | ৪ | ৬,০০০ |
৮ | তেলাপিয়ার খাদ্য | ৭,৪২৫ কেজি | ৪৭ | ৩,৪৮,৯৭৫ |
৯ | শ্রমিক | ১ জন (৪ মাস) | ৬,০০০ | ২৪,০০০ |
১০ | পুকুর লীজ | ১ একর (৬ মাস) | – | ২৫,০০০ |
১১ | ঔষধ ও অন্যান্য | থোক | – | ৫,০০০ |
মোট ব্যয় | ৪,৬১,০৭৫ |
লাভ:
আয় – ব্যয় = ৫,৮৭,৫০০ টাকা – ৪,৬১,০৭৫ টাকা = ১২৬,৪২৫ টাকা। বছরে ২.৫ চক্র বিবেচনায় এক একর জলায়তন থেকে প্রতি বছর সহজেই ১২৬,৪২৫*২.৫ = ৩,১৬,০৬৩ টাকা লাভ করা যায়।
অনুচ্ছেদটি লেখেছেন
ড. মো আবু সুফিয়ান, পিএইচডি ইন তেলাপিয়া ব্রিডিং
Email: [email protected]
Mobile: 01712644961
Fino puja car
October 11, 2020 at 7:34 pmExcellent Write-up
Shamser Ali
October 10, 2020 at 10:06 pmValo legechhe. Thank you
Saidur
October 8, 2020 at 5:25 pmGood