দেশীয় মাছের মধ্যে যে বিশেষ কয়েকটি মাছের বিভিন্ন গুণ সম্পন্ন খাদ্য হিসাবে বিশেষ গুরুত্ব আছে শোল মাছ তাদের মধ্যে অন্যতম। এই মাছটির চাষ করা যায় খুব সহজেই। চলুন জেনে নেয়া যাক পুকুরে শোল মাছের চাষ সম্পর্কে।
শোল মাছ চাষ
যে কোন ধরণের পুকুরে চাষ করা সম্ভব এই মাছের। ডোবা জাতীয় জলাশয় বা ছোট পুকুর যেখানে অল্প কচুরীপানা, বার শাপলা আছে, সেখানে এই জাতীয় পোনা প্রাকৃতিকভাবেই পাওয়া যেতে পারে ও বেড়ে ওঠে।
এই মাছটির দুটি ফুলকা ছাড়াও অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র থাকে। এতে দ্রবীভূত অক্সিজেন কম হলেও বেঁচে থাকতে পারে সহজে। এই মাছ চাষে ঝুঁকি কম, বিনিয়োগের অর্থ কম সময়ে লভ্যাংশ সহ ফেরত পাওয়া সম্ভব। মাছ বিক্রয় না হলে আবার পুকুরজাত করা যায় বলে লোকসানের সম্ভবনা খুবই কম।
ছোট অগভীর পুকুর যেখানে তিন চার ফুট জল থাকে অন্তত সেখানে এই মাছের চাষ সম্ভব। পুকুর প্রস্তুতির জন্য জলের পিএইচ দেখে নিয়ে প্রয়োজন অনুসারে চুন প্রয়োগ করাতে হয়। ।
অক্সিজেন কম থাকলেও চিন্তার বিষয় কম।তবে পিএইচ ৭.৫-৭.৭ এর মধ্যেই থাকতে হবে।
পরিপূরক খাবারের যোগান
প্রাণীকণার যোগান থাকতে হবে। ৫০ লিটার জলে আনুমানিক ১.৫ ml টিউবিফেক্স কেঁচো খুব কার্যকরী। তার খাবার প্রয়োগের জন্য নির্দিষ্ট একটি বা দু’টি জায়গা বেছে নিতে হবে। সেই জায়গা থেকেই দিনে এক বা দু’বার খাবার প্রয়োগ ধৈর্য সহকারে করতে হবে। মশার লার্ভা শোল মাছের অত্যন্ত পছন্দের খাবার। শোল মাছ চাষ যেখানে হবে, সেখানে মশার উৎপাত থাকবে কম।
রোগ-বালাইয়ের সংক্রমণ সচরাচর হয় না এই মাছের। তবে তেমন ক্ষেত্রে অবশ্যই স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তার সহায়তা নিতে হবে।
মাছ ধরা হয়ত কিছুটা শ্রমসাধ্য ব্যাপার। পুকুরে জল কমে গেলে জাল টেনে মাছ ধরা সহজ হয়।
পরিপূরক খাদ্য তৈরী করার জন্য =শুঁটকি মাছের গুঁড়ো, সেদ্ধ করা গম বা খুদের সাথে মিশিয়ে চিটে গুড় ও সাবুর সাহায্যে আঠালো অবস্থায় মেখে নিতে হবে। তারপর ট্রে বা পুকুরে রাখা পাইপের মধ্যে দেওয়া যেতে পারে।
একটি তিন কাঠা পুকুর থেকে ৭-৮ মাসেই মাছের ৫০০ কেজি উৎপাদন সহজেই সম্ভব। সেটা বিবেচনায় আর্থিক দিক থেকে এই মাছ চাষ খুব লাভজনক। শুধু তাই নয় এই মাছের আছে ঔষধি গুণ।