Tuesday, 05 August, 2025

পাবদা (Ompok pabda) মাছের লাভজনক চাষ পদ্ধতি


পাবদা মাছ (Ompok pabda) বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং লাভজনক একটি মাছ। এটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং চাহিদাও বেশি। সঠিকভাবে চাষ করলে এটি থেকে ভালো মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।

নিচে পাবদা (pabda catfish) মাছের লাভজনক চাষ পদ্ধতি ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো:

১. পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি

আরো পড়ুন
ভেনামী চিংড়ি চাষে রোগের কারন, লক্ষন, প্রতিকার এবং চিকিৎসা

ভেনামী চিংড়ি (Vannamei shrimp, Litopenaeus vannamei) চাষ বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে রোগবালাই এই চাষে অন্যতম Read more

বিদেশি আনারসের পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য, নতুন দিগন্তের হাতছানি

দেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে ফিলিপাইনের বিখ্যাত 'এমডি-২' জাতের আনারসের। কৃষি বিভাগ মনে করছে, এই Read more

পুকুরের আকার: ১০-৩০ শতাংশের পুকুর হলে ভালো হয়।

জলস্তর: ৩-৫ ফুট গভীর হতে হবে।

পানি পরিষ্কার রাখা: পানির pH মান ৬.৫-৭.৫ এর মধ্যে থাকা উচিত।

পুকুর প্রস্তুতি:

    • পুকুর শুকিয়ে চুন (CaO) প্রয়োগ করুন (প্রতি শতকে ১ কেজি)।
    • ৭ দিন পর গোবর (১০-১৫ কেজি/শতক) এবং ইউরিয়া ও টিএসপি (প্রতি শতকে ১০০-১৫০ গ্রাম) প্রয়োগ করুন।
    • পর্যাপ্ত পানির সংস্থান নিশ্চিত করুন।

২. পোনা সংস্থান ও মজুদ

পোনার উৎস: সরকারি বা বেসরকারি হ্যাচারি থেকে সুস্থ ও জীবন্ত পোনা সংগ্রহ করুন।

পোনা মজুদের ঘনত্ব:

          • প্রতি শতকে ১০০-১৫০টি পোনা ছাড়া যায়।
          • অধিক ঘনত্বে চাষ করলে বাড়তি অক্সিজেন ও খাবারের প্রয়োজন হবে।

পোনার সংযোজন:

পোনা পুকুরে ছাড়ার আগে ৩০ মিনিট পানির সাথে অভ্যস্ত করান।

৩. খাদ্য ব্যবস্থাপনা

প্রাকৃতিক খাদ্য:

    • শৈবাল, প্লাঙ্কটন ও ছোট জীব খাবার হিসেবে গ্রহণ করে।

পরিপূরক খাদ্য:

    • প্রোটিনসমৃদ্ধ ভাসমান খাদ্য দেওয়া উচিত (৩০-৩৫% প্রোটিন)।
    • শুরুতে প্রতি দিন ৩-৫% হারে খাবার দেওয়া হয় (মাছের মোট ওজনের ভিত্তিতে)।
    • প্রতি দিন ২-৩ বার খাবার দেওয়া উচিত।

৪. পানি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

  • প্রতি সপ্তাহে পানির গুণগত মান পরীক্ষা করুন।
  • ২৫-৩০% পানি প্রতি মাসে পরিবর্তন করুন।
  • রোগ প্রতিরোধের জন্য জৈবিক ও রাসায়নিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন (যেমন: চুন ও লবণ প্রয়োগ)।
  • অক্সিজেন কমে গেলে এয়ারেটর ব্যবহার করুন।

৫. রোগ ব্যবস্থাপনা

  • সাধারণ রোগ: ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীজনিত সংক্রমণ হতে পারে।
  • প্রতিরোধ ব্যবস্থা:
    • পানি পরিষ্কার রাখা
    • সঠিক খাবার প্রয়োগ
    • প্রয়োজনে ভেটেরিনারি পরামর্শ গ্রহণ

৬. বাজারজাতকরণ ও লাভ

  • ৪-৫ মাসের মধ্যে মাছ বাজারজাত করা যায়।
  • প্রতি কেজি পাবদা মাছের বাজার মূল্য সাধারণত ৪০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • উৎপাদন খরচ কম থাকায় লাভজনক চাষ সম্ভব।

সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাবদা মাছের চাষ অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। উন্নত প্রযুক্তি ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে কম সময়ে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।

0 comments on “পাবদা (Ompok pabda) মাছের লাভজনক চাষ পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ