দেশি বিজ্ঞানীরা আগাম জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন। তাদের উদ্ভাবিত আমন ধান চাষ করলে দেশের উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা ফিরবে না আর কখনও। এমনটাই দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
রংপুরের তারাগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এ একথা বলেন তিনি। বিনা-১৬ ও বিনা-১৭ জাতের ধানের নমুনা কর্তন ও মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। মানুষ মঙ্গার কথা ভুলে গেছে।
এই আয়োজনে কৃষিমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশ থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে সরকারের নানা পদক্ষেপের ফলে । এ অবস্থায় বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত আগাম জাতের আমন ধানের চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেই সাথে রংপুর, নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করতে পারলে দেশে ভবিষ্যতে আর কখনও মঙ্গা ফিরে আসবে না।
ধানের এ জাতগুলো ভবিষ্যতে যাতে মঙ্গা ফিরে না আসতে পারে, সে ব্যাপারে গ্যারান্টি দেবে
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগে আশ্বিন-কার্তিক মাস এলেই উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা বা আধা দুর্ভিক্ষ দেখা দিত। খাবার থাকত না বেশির ভাগ মানুষের ঘরে।
মন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে বিনা ধানের সুবিধা তুলে ধরে বলেন, অপার সম্ভাবনা রয়েছে বিনার উদ্ভাবিত এ জাতগুলোর। উৎপাদন ভালো এবং ১০০ দিনের মধ্যেই পাকে। এ ধান কাটার পরেও আলু, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল করা যাবে।
সংশ্লিষ্টদের নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাতগুলোকে দ্রুত কৃষকের কাছে ছড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন আব্দুর রাজ্জাক। বলেন, ফসলের নতুন বিন্যাসকে দ্রুত কাজে লাগানোর কথা বলেন তিনি। মানুষের ঘরে আশ্বিন-কার্তিক মাসেও খাবার থাকবে উন্নত আগাম জাতগুলো চাষ করলে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রদত্ত তথ্য অনুসারে, তাদের উদ্ভাবিত আমন মৌসুমের জন্য উচ্চফলনশীল ও স্বল্প জীবনকালের ধানের জাত হলো বিনা-১৬ ও বিনা-১৭। বিনা-১৬-এর জীবনকাল ৯৫ থেকে ১০০ দিন, গড় ফলন বিঘা প্রতি ২৪ মণ করে। বিনা-১৭-এর জীবনকাল ১১০ থেকে ১১৫ দিন, গড় ফলন বিঘাপ্রতি ২৭ মণ করে।
বিনার দাবি, এই জাতগুলোর জীবনকাল কম হবার কারণে পানি ও অন্যান্য উপকরণ খরচ কম লাগে।
আগে আমন ধানের জীবনকাল ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ দিন। এরপর আমনের ফলন ছিল বিঘাপ্রতি মাত্র ৪ থেকে ৫ মণ। সে তুলনায় নতুন জাতগুলোর জীবনকাল প্রায় ৫০ থেকে ৬০ দিন কম।অর্থাৎ আশ্বিন মাসে ধান পাকে। এতে মঙ্গার সময় প্রান্তিক কৃষকের খাদ্যনিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে বিনা।