Saturday, 10 May, 2025

সর্বাধিক পঠিত

গবাদি পশুর সুরক্ষায় ভোলার দুর্গম চরে আধুনিক কিল্লা


গবাদি পশুর সুরক্ষায় ভোলার দুর্গম চরে নির্মিত হয়েছে আধুনিক কিল্লা। দুর্যোগকালীন সময়ে চরাঞ্চলের গরু এবং মহিষ নিরাপদ রাখতে জেলা সদরের চর চটকিমারা এলাকায় এ কিল্লাটি স্থাপন করা হয়।

সূত্র জানিয়েছে, পাকা ভবনের আধুনিক কিল্লাটি ভূমি থেকে উচ্চতা সাত ফুট। যে কারণে খামারিদের গরু-মহিষ ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে সুরক্ষিত। এছাড়াও বজ্রপাত থেকে রক্ষায় ‘বজ্র নিরোধক দণ্ড’ রয়েছে। এতে বজ্রপাতে হতাহতের ঝুঁকি কম। এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রয়েছে কম্পোস্ট পিট।

কিল্লায় রাখালদের জন্য রয়েছে নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ, স্বাস্থ্যসম্মত বাথরুম ও সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থাও রয়েছে।

আরো পড়ুন
গ্রামীণ অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাত: মাসকোভি হাঁস পালন

গ্রামীণ অর্থনীতিতে হাঁস পালন একটি লাভজনক ও টেকসই উদ্যোগ হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে মাসকোভি হাঁস (যাকে অনেকেই 'চীনা হাঁস' নামে চেনেন) বিশেষভাবে Read more

বাজারে নতুন চালের সরবরাহে দামে স্বস্তি, তবে সবজির দাম ঊর্ধ্বগতি
সবজির উপর মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা উঠে এসেছে গবেষণায়

দেশের বিভিন্ন জেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হওয়ায় বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করেছে। এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে মিনিকেট চালের Read more

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ভোলায় মহিষের পরিবেশগত ও টেকসই উন্নয়নে সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট বাস্তবায়নে কাজ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা’ (জিজেইউএস)। চরাঞ্চলে গরু-মহিষের এ কিল্লা প্রথমবারের মত নির্মিত করা হলো। অচিরেই জেলার আরো দুটি কিল্লা স্থাপন করা হবে। প্রতিটি কিল্লা স্থাপনে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।

এদিকে ভোলা সদর উপজেলার চর চটকিমারায় নির্মিত মহিষের আধুনিক কিল্লাটি ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খামারিদের মহিষের নিরাপত্তার পাশাপাশি রাখালদের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে।

চর চটকিমারার মহিষ খামারি নাজিম উদ্দিন, আল আমিন, হানিফ হাওলাদার ও নুরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় পানির উচ্চতা বাড়লেও আমরা আমাদের মহিষগুলো এই কিল্লায় নিরাপদে রাখতে পেরেছি। আমাদের মহিষ ভেসে যায়নি, পাশাপাশি আমরাও এই কিল্লায় নিরাপদ আশ্রয় নিতে পেরেছি।

এর আগে আমাদের কোনো আধুনিক কিল্লা ছিল না, বন্যার সময় আমাদের মহিষ ভেসে যেত, অনেক আর্থিক ক্ষতি হতো। চরে আমাদের জন্য কোনো নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যকর পায়খানার ব্যবস্থাও ছিলো না। কিন্তু এই প্রজেক্ট থেকে আমাদের যে এই আধুনিক কিল্লাটি দেওয়া হয়েছে তাতে আমরা এই সব সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি। প্রোজেক্টের অন্তর্ভুক্ত খামারিদের পাশাপাশি অন্যান্য খামারিরাও এই বন্যার সময় তাদের মহিষগুলো কিল্লায় রাখতে পেরে অনেক দুশ্চিন্তামুক্ত ছিল।

গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার উপ-পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান জানান, এখন মনে হচ্ছে যে আমরা সত্যিই উপকূলীয় এলাকার মহিষের সুরক্ষার জন্য ভাল একটা কাজ করতে পেরেছি।

জানা যায়, এসব কিল্লায় সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি) এর মাধ্যমে ভোলা জেলার সম্ভাবনাময় এই মহিষ খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার এসইপি প্রকল্প ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এ ব্যাপারে গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন জানান, আরো দুটি চরে আধুনিক কিল্লার নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যাতে করে মহিষ খামারিরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং রাখালরাও নিরাপদ থাকতে পারে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।

0 comments on “গবাদি পশুর সুরক্ষায় ভোলার দুর্গম চরে আধুনিক কিল্লা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ