মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি। লক্ষীপুরে চলতি মৌসুমে সয়াবিনসহ নানা ধরনের উঠতি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দিশেহারা চরাঞ্চলের পরিবারগুলো। নদী ভাঙ্গন রোধে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ফসল ও স্থানীয় বসতি ঘরবাড়ি রক্ষার দাবি স্থানীয়দের।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলাকে সয়াল্যান্ড নামে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। জেলার কমলনগর ও রামগতির বেশ কয়েকটি গ্রামের কোটি টাকার সয়াবিন নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি, সাহেবেরহাট, চর ফলকন, চর লরেন্স ও পাটারিরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি ভাঙছে।
এদিকে রামগতি উপজেলার রামদয়াল, বালুরচর, বাংলাবাজার, চরগাজী, চর আলগী, সেবাগ্রাম, বড়খেরী, চর রমিজ ও চর আবদুল্লার কোটি টাকার সয়াবিন নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে উৎপাদিত সয়াবিনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর জেলায় উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৭০ ভাগ সয়াবিন। গত বছর ৪৮ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয়েছে, উৎপাদন হয়েছে ৮৬ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় সোয়া ৩০০ কোটি টাকা।
চলতি মৌসুমে সয়াবিন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৩ হাজার ২৩৭ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৪০ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৯১৭ মেট্রিক টন। কিন্তু আবাদকৃত জমি অনুযায়ী সম্ভাব্য উৎপাদন ৭৭ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন।
এর আগে ২০১৭ সালে ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীতে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ওই বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ার কনসক্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যরা কাজটি সম্পন্ন করেছেন। নির্মাণের পর এক বছর পর্যন্ত সেনাবাহিনী বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষণ করেছে। ওই তিন কিলোমিটার এলাকা এখন আর ভাঙছে না।
লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) আব্দুল মান্নান বলেন, রামগতি মেঘনার পাড়ে অবশিষ্ট অংশে বাঁধের ফাইল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। একনেকে পাসের অপেক্ষায়। নদী শাসনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষকে রক্ষা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন এমপি।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, মেঘনার ভাঙন থেকে এ অঞ্চলকে রক্ষা করার বিষয়ে আমাদের আন্তরিকতার কোন কমতি নেই। সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধ হয়েছে। অবশিষ্ট অংশের বাঁধ দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।