মাংসের প্রোটিন কে বলা হয় প্রাণিজ প্রোটিন এবং ডালের প্রোটিন কে বলা হয় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। কোন প্রোটিন খাবেন মাংসের নাকি ডালের ? কোন প্রোটিন আপনার শরীরের জন্য ভাল ?
দেহ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা, ফ্যাট বা স্নেহপদার্থ এবং প্রোটিন।
প্রোটিন হলো অ্যামিনো এসিড দিয়ে তৈরি, যা কোষের “বিল্ডিং ব্লকস” হিসাবে কাজ করে। প্রেটিন শরীরে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যেমন: প্রোটিন কোষগুলিতে বেশিরভাগ কাজ করে এবং দেহের টিস্যু এবং অঙ্গগুলির গঠন, কার্যকারিতা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়।
মাংস, মাছ, হাঁস-মুরগি, ডিম, শিং এবং দুগ্ধজাত খাবারের মতো অনেক খাবারেই প্রোটিন পাওয়া যায়। তবে নিরামিষ ভোজী মানুষরা প্রোটিন পান মূলত ডাল ও বাদামের মতো খাবার থেকে।
কিন্তু প্রাণিজ নাকি উদ্ভিজ্জ কোন ধরনের প্রোটিন দেহের পক্ষে বেশি উপযোগী তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে অনেকের মনেই।
প্রাণিজ প্রোটিন:
মানুষের দেহে যে ধরনের প্রোটিন পাওয়া যায় তা অনেকটাই প্রাণিজ প্রোটিনের সমতুল। ফলে এই প্রোটিন মানব দেহে সহজে শোষিত হয়।
পাশাপাশি প্রাণিজ প্রোটিনে থাকে ৯ ধরনের ‘এসেনশিয়াল আমাইনো অ্যাসিড’। এই আমাইনো অ্যাসিডকে প্রোটিনের গঠনগত একক বলা হয়। এই কারণে প্রাণিজ প্রোটিনকে অনেকেই সম্পূর্ণ প্রোটিন বলেন।
উদ্ভিজ্জ প্রোটিন:
অধিকাংশ শাক সবজিতে প্রাপ্ত প্রোটিনের পরিমাণ প্রাণিজ প্রোটিনের তুলনায় কম থাকে। তা ছাড়া সব উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে সব ধরনের এসেনশিয়াল আমাইনো অ্যাসিড পাওয়া যায় না, তাই উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে সাধারণত অসম্পূর্ণ প্রোটিন বলা হয়।
প্রাণিজ প্রোটিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের তুলনা করলে, নিশ্চিত ভাবে কোনও একটিকে এগিয়ে রাখা অসুবিধাজনক। কারণ, প্রাণিজ প্রোটিন সহজলভ্য হলেও প্রাণিজ প্রোটিন বা মাছ-মাংস অতিরিক্ত খেতে গেলে দেহে কিছু কিছু ক্ষতিকর প্রভাবও পড়তে পারে।
অন্য দিকে শাক সবজি থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন কিছুটা দুর্লভ হলেও প্রোটিনের সঙ্গে সঙ্গে শাক সবজি থেকে অন্যান্য নানা ধরনের পুষ্টিগত উপাদান মেলে। তাই সার্বিক ভাবে অনেকেই উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে এগিয়ে রাখেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সার্বিক পুষ্টির জন্য ভারসাম্যই শেষ কথা। প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের সুষম বণ্টনই সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা