কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়ে জাতীয় বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেয়েছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের মর্জিনা বেগম। নিজে স্বাবলম্বি হওয়ার পাশাপাশি ৫ হাজারের বেশি নারী-পুরুষকে আধুনিক কৃষিতে সম্পৃক্ত করেছেন তিনি।
এই অনুপ্রেরণা প্রদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ২৭ জুন ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাকে রৌপ্যপদক প্রদান করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
জানা গেছে, পায়রাবন্দের চুহড় গ্রামে মর্জিনা বেগম তার বসতভিটা, পতিত জমিসহ ফসলি খামারে জৈব পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি আবাদ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পাশাপাশি সুগন্ধি ধান, পাট, ভুট্টা ও আলু আবাদ করেছেন। তার উৎপাদিত ফসলের মধ্যে হাইব্রিড শশার উৎপাদন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৫ মেট্রিক টন।
ব্রিধান-৪৯ উফশি ৫ মেট্রিক টন ,ব্রি-ধান ৫০, বাংলামতি ৬ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন, আলু উফশি ৩৩ মেট্রিক টন, পাট তোষা ৫ মেট্রিক টন, ভুট্টা হাইব্রিড ১৩ দশকি ৬ মেট্রিক উৎপাদন করেছেন। তিনি ভামি কম্পোস্ট, কম্পোস্ট হিপ,কম্পোস্ট পিট, কুইক কম্পোস্ট, খামারজাতসার, বিষ্ঠা কম্পোস্ট, পাতা কম্পোস্ট, সবুজ কম্পোস্ট ও হারবাল কম্পেস্ট সার তৈরী ওই এলাকায় বিপ্লব ঘটিয়েছেন।
তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ৫ হাজার নারী পুরুষ একইভাবে কৃষি কাজে নিয়েজিত হয়ে লাভবান হয়েছেন। মর্জিনা বেগম বছরে ১০ মেট্রিক টন ভার্মি কম্পোাস্ট উৎপাদন করেন। কম্পোস্ট সার ও বিভিন্ন ফসলে তার বছরে আয় হয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। তিনি ২৫ জনের একটি নারী গ্রুপ তৈরী করে তাদের স্বাবলম্বি করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া ধান ক্ষেতে পার্চিংয়ের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছেন।
মর্জিনা বেগমের স্বামী হামিদুর রহমার একজন অবসর প্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা। তার ৫ ছেলে। তিনি ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।
মর্জিনা বেগম তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমার এই সাফল্যে কৃষি কর্মকর্তা, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা, স্বামী ও সন্তানদের অনুপ্রেরণা রয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
পায়রাবন্দ উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র বলেন, মর্জিনা বেগম তার ঐকান্তিক চেষ্টায় এই সাফল্য পেয়েছেন। আমরা পরামর্শ দিয়ে সহয়োগিতা করেছি।