Monday, 11 August, 2025

এখনো সেঁউতি ও ডোঙায় সেচ দেন কৃষকেরা!


বাংলাদেশের কৃষিতে একসময় সেচযন্ত্র হিসেবে টিন বা বাঁশের তৈরি সেঁউতি ও ডোঙার ব্যাপক চাহিদা ছিল। টিন বা বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি ডোঙা দিয়ে খাল বা নিচু জমি হতে উপরে পানি সেচ সিঞ্চন করতো (স্থানীয় নাম জাত)।

আদিকাল থেকেই গ্রামবাংলার কৃষকদের চিন্তা চেতনার ফসল হিসেবে ব্যবহৃত হতো এ সেঁউতি ও ডোঙা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় যান্ত্রিক সভ্যতার যাঁতাকলে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন এই সেচ সিঞ্চন ব্যবস্থা।

তবে এখনো সেঁউতি ও ডোঙার মাধ্যমে নদী থেকে ইরি-বোরো ক্ষেতে পানি সেচ দিতে দেখা যায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের নশরতপুর ও সাতনালা ইউনিয়নে।

আরো পড়ুন
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

‘জুলাই বিপ্লব’ এবং ‘যুব উৎসব ২০২৫’ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। গত ৬ আগস্ট মিরপুরে Read more

ভেনামী চিংড়ি চাষে রোগের কারন, লক্ষন, প্রতিকার এবং চিকিৎসা

ভেনামী চিংড়ি (Vannamei shrimp, Litopenaeus vannamei) চাষ বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে রোগবালাই এই চাষে অন্যতম Read more

কৃষকরা ডোঙা দিয়ে ভূ-উপরিস্থ পানি সেচ দেয়ার সুবিধা পায়। কায়িক পরিশ্রম হলেও এতে সেচ খরচ কম লাগে।

এ অঞ্চলে ইছামতি, কাঁকড়া, ভেলামতি, আত্রাই, বেলান নদী এ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে। এসব নদী শুকনো মওসুমে কোথাও পানি আছে, কোথাও চাষের জমি হয়েছে। তবে এ উপজেলার অনেক মানুষ আধুনিক যুগের শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে ফসল চাষ করছেন।

চিরিরবন্দরের সাতনালা ইউনিয়নের খামার সাতনালা গ্রামের হেদলাপাড়ার মো. সামসুদ্দিন (৫৬) বলেন, ‘হামরা গবিব মানুষ। এখন পানি সেচের জন্য কত আধুনিক যন্ত্রপাতি বাইর হইছে। শ্যালো, ডিপমর্টার আরও কতো কী ? হামার এত টাকা নাই, যা দিয়া হামরা ওইলা যন্ত্র কিনিবার পারি। এমনিতেই পানির দাম দিবার পারি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘মোর কপাল ভালো যে, মোর ভুই’র(জমি) পাশোত তাও পানি আছে। না হইলে যে মোর কি হইল হয়?’

কৃষক আমিরউদ্দিন (৬০) বলেন, ‘হামরা বাপ-দাদার ঘরক দোন ও সেঁউতি দিয়া সেচকাম করির দ্যাখিছি। হামরা গরীব মানুষ। মেশিন কিনিমো কীভাবে। তাই জাত দিয়া নদী থাকি পানি তুলি জমিত দিয়া ফসল ফলাই। এখন আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি আসায় এগুলোর ব্যবহার আর তেমন হয় না।’

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্তকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, নদী-পুকুরে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দোন/ডোঙা আর সেঁউতির ব্যবহার আর আগের মতো চোখে পড়ে না।

তবে যে জায়গাগুলোতে সেচ পাম্প অপ্রতুল সে জায়গাগুলোতে এখনও দোন ও সেঁউতির ব্যবহার দেখা যায়। রবি মৌসুমে কৃষকরা নদী-নালা, খাল-বিল থেকে দোন/ডোঙা আর সেঁউতির মাধ্যমে জমিতে সেচ সুবিধা দিয়ে থাকে।

0 comments on “এখনো সেঁউতি ও ডোঙায় সেচ দেন কৃষকেরা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ