গত দেড় মাসে মুরগির দাম ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে সোনালি জাতের মুরগির দাম সবচাইতে বেশি বেড়েছে। উৎপাদন কম ও চাহিদা বাড়ায় বেশি দামে মুরগী কিনতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা যা এক মাস আগেও ছিলো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। মধ্য জানুয়ারিতে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি। গত মাসে সোনালি মুরগি পাওয়া যেত ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি। এর আগে ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে দেশে খুচরায় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। গত বছর এই সময় ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (বিপিকেআরজেপি) এবং পোল্ট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ (পিপিবি) সূত্রে জানা যায়, গতকাল ঢাকার আশপাশের খামারগুলোতে ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১২৩ থেকে ১২৫ টাকা কেজি। মাসখানেক আগেও ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি। ১৫ জানুয়ারি খামারগুলোতে ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকা কেজি। অর্থাৎ খামারপর্যায়ে দেড় মাসে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।
বর্তমানে খামারপর্যায়ে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি, যা এক মাস আগেও ছিল ১৯০ টাকা কেজি। মধ্য জানুয়ারিতে অর্থাৎ মাস দেড়েক আগে খামারপর্যায়ে সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি। অর্থাৎ দেড় মাসে এই জাতের মুরগির দাম বেড়েছে ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত।
খামারিরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম বাড়ার ফলে পোল্ট্রি খাদ্যের প্রধান কাঁচামাল সয়ামিলের দাম কেজিতে ১৩ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। এতে গড়ে খাদ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। উৎপাদন কম হওয়াকেও কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোহসীন বলেন, সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সামাজিক অনুষ্ঠান বেশি থাকে। এতে ৭ থেকে ৮ শতাংশ মুরগির চাহিদা বাড়ে। এবার করোনার কারণে আটকে থাকা অনুষ্ঠানগুলো একযোগে শুরু হওয়ায় মুরগির চাহিদা বেড়েছে ১৫-১৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম বাড়তি থাকায় পোল্ট্রি খাবারের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা। আগে গড়ে ৪২ টাকায় খাবার পাওয়া গেলেও এখন লাগছে ৪৭ টাকার ওপর। এ ছাড়া শীতের সময় আবহাওয়ার কারণে মুরগির গড় ওজনও কম বেড়েছে। সব মিলিয়ে বাড়তি চাহিদা, জোগানে ঘাটতি এবং উৎপাদন খরচ বাড়ায় মুরগির বাজার চড়ছে। তবে মার্চের মাঝামাঝি দাম কমে আসতে পারে।