যশোরের শার্শা উপজেলায় বোরো ধান চাষে কৃষকের ব্যস্ত সময় কাটছে। ধানের ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার, সার ছিটানো আর পোকা দমনে চলছে পরিচর্যা।
আবহাওয়ার অনুকূলে থাকলে বোরো চাষে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে এবার রেকর্ড পরিমান ধানের উৎপাদন হবে বলে আশা ধান চাষিদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নৌকমান্ডো দাশ জানান, এবছর শার্শায় বোরো ধানের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ভাঙবে। চলতি বোরো মৌসুমে গত বারের তুলনায় প্রায় ৫শ হেক্টর জমিতে বেশি ধান চাষ হয়েছে।
এ বছর বোরো চাষ হয়েছে ২৩ হাজার ৬শ ৭০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে ৬ হাজার হেক্টর বাসমতি, ৫ হাজার হেক্টর বিরি-৬৩ এবং সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে মিনিকেট ধানের চাষ হয়েছে।
শার্শা কৃষি দপ্তর থেকে জানা যায়, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর থেকে এস এল -৮ এইচও ইস্পাহানি কোম্পানির-১-২ জাতের উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের বীজ ৫ হাজার চাষিকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে, যাতে আগামি বছর থেকে কৃষকরা নিজেরাই নিজেদের চাষযোগ্য জমিতে বীজ তৈরি করে রোপন করতে পারেন। এর আগে ইনব্রিড ধানের বীজ কৃষকরা নিজেরাই তৈরি করতে পারতেন। হাইব্রিড জাতের ফলন বিঘা প্রতি ৩০ মন পর্যন্ত হতে পারে বলে কৃষি কর্মকর্তার দাবি।
বর্তমানে চাষকৃত ইনব্রীড জাতীয় ধানের সর্ব্বোচ ফলন ২৭ মন পর্যন্ত চাষিরা ঘরে তুলছে। বর্তমান বাজারে ধানের দাম নিয়েও খুশি চাষিরা।
প্রতি মণ ধানের বর্তমান বাজারদর ১১শ টাকা। ধানের খড় বা বিচালি বিক্রি হচ্ছে মোটা দামে। ধান এবং বিচালির দাম স্থিতিশীল থাকলে এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কাটিয়ে উঠতে পারলে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে কৃষকরা এবার ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করে বেনাপোলের ঘীবা গ্রামের ধানচাষি মফিজুর রহমান।
উপজেলার স্বরুপদহ গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতিবছর বেরো ধান কৃষকের ঘরে উঠার সাথে সাথে অসৎ আড়ৎদার এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দেয়। প্রশাসনের যথাযথ তদারকি না থাকায় কম মূল্যে কৃষকদের ধান বিক্রি করে দিতে হয়।
ধান ক্রয় দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা গেলে প্রকৃত চাষিরা সুফল পাবে। এজন্য সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ধান কেনার ব্যবস্থা করতে হবে। নচেৎ গতবারের মত এবারও ধান চাষিরা ধানের প্রকৃতমূল্য না পেয়ে মারাত্মক ক্ষতি গ্রস্থ হবেন।